Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Agnipath

Ajit Doval: ভেবেচিন্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত, অগ্নিপথ প্রত্যাহার হবে না কোনও ভাবেই, বার্তা ডোভালের

এই প্রকল্পের স্বল্প মেয়াদের চাকরিজীবন ও অবসরের পরে পেনশনের ব্যবস্থা না থাকার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন যুবকদের একাংশ।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২২ ০৭:১৭
Share: Save:

কৃষি বিলের ধাঁচেই অগ্নিপথ প্রকল্প প্রত্যাহারের দাবি তুলে সরব রয়েছেন দেশের যুব সমাজের একাংশ ও বিরোধীরা। কিন্তু কোনও ভাবেই ওই প্রকল্প প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে না বলে আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তাঁর কথায়, ‘‘এটি কোনও হঠাৎ করে নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়। ভেবেচিন্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত।’’ আজ ডোভালের সাক্ষাৎকার দেখে রাজনীতির অনেকেই মনে করছেন অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সামলাতে মাঠে নামানো হল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে।

গত মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ওই প্রকল্পে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত সেনা (অগ্নিবীর)-দের ৭৫ শতাংশকে চার বছরের মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হবে এমন শর্ত রাখা হয়। সরকারি চাকরির স্থায়িত্ব ও পেনশনের কারণে সেনায় যোগদান করে থাকেন মূলত গ্রামীণ ভারতের যুবকেরা। কিন্তু এই প্রকল্পের স্বল্প মেয়াদের চাকরিজীবন ও অবসরের পরে পেনশনের ব্যবস্থা না থাকার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন যুবকদের একাংশ। প্রকল্প প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। বিক্ষোভ সামলাতে দফায় দফায় শাসক দলের নেতা, সেনার শীর্ষ কর্তারা সরব হলেও, গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন জারি রেখেছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। যা থামাতে শেষ পর্যন্ত আজ মাঠে নামানো হল অজিত ডোভালকে। একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে তিনি দাবি করেন, ‘‘বিস্তর আলোচনার পরে অগ্নিপথ প্রকল্প রূপায়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই ওই প্রকল্প প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই নেই। বিশ্বের তরুণতম দেশ ভারত। তাই তার সেনার গড় বয়স কমাতেই ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’’ ডোভালের দাবি, ‘‘২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে যে নিরাপদ ও শক্তিশালী ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাকেই বাস্তব রূপ দিতে ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পরেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুতরাং তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।’’

চার বছর কাজের পরে অবসর নেওয়া অগ্নিবীরদের ভবিষ্যৎ জীবন কোন খাতে গড়াবে তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আন্দোলনকারীদের। আজ ডোভাল বলেন, ‘‘আজকাল মানুষ দু’বার বা তিন বার পেশা বদলান। প্রথম ব্যাচের অগ্নিবীরেরা যখন চার বছর পরে অবসর নেবেন তত দিন ভারত পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে। দক্ষ ওই অল্পবয়সি সেনাকর্মীদের তাই অবসরের পরে কাজের অভাব হবে না।’’ এক বার যাঁরা সেনার অনুশাসনে থেকেছেন তাঁদের বিপথে যাওয়া কঠিন বলেও দাবি করেছেন ডোভাল।

এ দিকে আজ সেনা কর্তাদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, অগ্নিবীরদের নিয়োগ নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী জানান, ‘‘যে ভাবে অতীতে সেনা নিয়োগ হয়েছে সেই ভাবেই অগ্নিবীরদের নিয়োগ করা হবে। স্থল সেনায় নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ পুরী জানান, ‘‘নিয়মিত সেনার সঙ্গে বৈষম্যের কোনও প্রশ্নই নেই। যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব দেখালে এক জন অফিসারের মতোই এক জন অগ্নিবীরের নাম সর্ব্বোচ্চ পদকের জন্য বিবেচিত হবে।’’ একই ভাবে অগ্নিবীরদের প্রশিক্ষণের মেয়াদ কম করা হলেও, নিয়মিত সেনার ধাঁচেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

সেনা কর্তৃপক্ষ আজ ফের জানিয়েছেন, মূলত জওয়ানদের গড় বয়স কমাতেই চার বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরী জানান, ‘‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথ মহড়া চলাকালীন দেখা গিয়েছে সে সব দেশের জওয়ানদের গড় বয়স অনেক কম। এ দেশের সেনা জওয়ানদের গড় বয়স কমানোর জন্য একাধিক কমিটি সুপারিশ করেছিল। সে সবের ভিত্তিতেই অগ্নিপথ প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই সেনায় যোগদান করেছেন তাঁদের জন্য অগ্নিপথ প্রকল্প প্রযোজ্য হবে না।’’

বিক্ষোভ ঠেকাতে তড়িঘড়ি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। আজ ভাইস অ্যাডমিরাল ডি কে ত্রিপাঠী স্বীকার করে নেন, নৌসেনায় নিয়োগ ২৫ জুন থেকে শুরুর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা আগামিকাল থেকেই শুরু হচ্ছে। তিনি জানান, ‘‘নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া অগ্নিবীরদের কাজে যোগ দেওয়ায় অগ্রাধিকার দেবে বেসরকারি জাহাজ সংস্থাগুলি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Agnipath Ajit Doval
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy