ঐতিহ্যবাহী ‘মিথিলা পাগ’-এ বরণ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারকে। সোমবার পটনায় ভার্চুয়াল সমাবেশে। ছবি: পিটিআই।
দেশজোড়া অতিমারির মধ্যেও বিধানসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাওয়ায় মাঠে নেমে পড়লেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি-জোটের কান্ডারি জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। তবে লকডাউনের কারণে আপাতত ভার্চুয়াল মাঠকেই বাছতে হয়েছে তাঁর সোমবারের ‘নিশ্চয় সংবাদ’ জনসভার জন্য।
তবে নীতীশ বুঝেছেন— এই অতিমারি মোকাবিলা, তার সঙ্গে বন্যাত্রাণে সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা হাজার হাজার অভিযোগের ঢেউ ভেঙে এ বার তখতে বসতে হবে তাঁকে। লড়াইটা তাই বেশ কঠিন। আর তা কঠিনতর করে তুলতে উঠে পড়ে লেগেছে আর এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)। মাস ছয়েক ধরেই নীতীশকে বিঁধে চলেছিলেন এই দলের নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলের চিরাগ। রবিবার দলের বৈঠকে অন্য নেতারা সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন— নীতীশের নেতৃত্বে ভোটে লড়াটাই হবে অনৈতিক। মুখ্যমন্ত্রীর ‘সীমাহীন ব্যর্থতা’-র দায় এলজেপি নেবে না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্ষীয়ান নেতা রামবিলাস এ বার বৈঠকে বসে নেতাদের কথা শুনবেন। তার পরে সিদ্ধান্ত নেবে এলজেপি, রাজ্যের তফসিলি জাতি-জনজাতি ভোটারদের একাংশ যাদের ভোটব্যাঙ্ক।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের সব তফসিলি যুবককে চাকরি দেওয়ার দাবি তুলেছেন চিরাগ। অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের সব তফসিলি পরিবারকে জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও পরে আর উচ্চবাচ্য করেনি নীতীশ সরকার। বিহারের গর্ব অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড় হলেও মুখ্যমন্ত্রী তৎপরতা দেখাননি— এই অভিযোগেও সরব হয়েছে এলজেপি।
তবে নীতীশের বিরুদ্ধে ঝাঁক ঝাঁক তির ছুড়লেও বিজেপির বিরুদ্ধে চুপ চিরাগ। সেই দিকে তর্জনী তুলে নীতীশের দলের এক নেতার দাবি— ভোট এলে দুটো বাড়তি আসনের জন্য শরিকেরা এই সব করেই থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘এত যদি অভিযোগ, এনডিএ ছেড়ে আলাদা নির্বাচন করুক না এলজেপি! জানে, জেডিইউ আর বিজেপি পাশে না-থাকলে জামানত খোয়াবে সর্বত্র। আসন রফা না-হওয়া পর্যন্ত তাদের এই নাটক চলবে।’’
এ দিনের ভার্চুয়াল জনসভায় এ বিষয়ে একটি কথাও তাই বলেননি নীতীশ। আগের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের আমলের সঙ্গে তাঁর আমলের বিহারের ছবিটিকেই সোমবার অস্ত্র করেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেন, উন্নয়নের জোয়ারে তিনি বদলে দিয়েছেন বিহারের ‘পিছিয়ে পড়া’ ভাবমূর্তি। কিন্তু তার পরেও তাঁকে তুলতে হয়েছে বিরোধী আরজেডি নেতা তেজপ্রতাপের দাম্পত্য কলহের বিষয়টি। লালুপ্রসাদ-পুত্রের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ তুলে আদালতে গিয়েছেন স্ত্রী ঐশ্বর্যা। নীতীশ এ দিন বলেন, “ঐশ্বর্যা লেখাপড়া জানা মেয়ে। কী অত্যাচারটা তাকে করা হয়েছে শ্বশুরবাড়িতে। কারও ঘরোয়া বিষয়ে নাক গলাতে চাই না। তবে বিহারের মানুষ ভেবে দেখুন, এমন পরিবারকে ভোট দেবেন কি না— যারা শিক্ষিত বউকে মর্যাদা দিতে জানে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy