—প্রতীকী ছবি।
নয়াদিল্লি, ১১ সেপ্টেম্বর: অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। এই ধাঁচের অচেনা রোগের মোকাবিলার প্রস্তুতি কী রকম হওয়া উচিত, তা নিয়ে আজ সবিস্তার রিপোর্ট প্রকাশ করল নীতি আয়োগ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড চলে গেলেও ওই ধরনের অচেনা সংক্রমণের আশঙ্কা সর্বদাই রয়েছে। বিশেষত, অপ্রত্যাশিত গতিতে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, দূষণের কারণে পরিবেশের পরিবর্তন, প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যে সম্পর্ক পাল্টে যাওয়া ইত্যাদি আগামী দিনে কোভিডের মতো একাধিক ঘাতক সংক্রমণ ডেকে আনবে বলেই মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সতর্কবার্তা, ভবিষ্যতে যে মহামারি দেখা
দেবে, তার জন্য অনেকাংশে দায়ী থাকবে অন্য প্রাণীর দেহের প্যাথোজেন বিভিন্ন কারণে মানবশরীরে ছড়িয়ে পড়া। ওই প্যাথোজেন (সংক্রমিত অণুজীব, যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া উভয়ই হতে পারে) মানবশরীরে বাসা বাঁধলে তা করোনা বা তার থেকেও প্রাণঘাতী সংক্রমণ ডেকে আনতে পারে।
এই কারণেই রিপোর্টটিতে বাদুড়ের উপরে বিশেষ নজরদারির কথা বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত পঞ্চাশ বছরে ইবোলা ভাইরাস, নিপা ভাইরাস, হেন্ড্রা ভাইরাস, সার্স-কোভ, মার্স-কোভ, সার্স কোভ-২ (করোনা)–এর মতো সংক্রমণের জন্য দায়ী হল বাদুড়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাদুড়ের সঙ্গে প্রায় দু’শো রকমের ভাইরাসের সম্পর্ক রয়েছে। ওই ভাইরাসগুলি হল আরএনএ ভাইরাস, যা পরিবর্তিত পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে সক্ষম। এই ক্ষমতাই তাদের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। তাই সংক্রমণ রুখতে মানুষ ও বাদুড়ের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার বলে মন্তব্য করা হয়েছে রিপোর্টে।
কোনও অচেনা রোগে কেউ আক্রান্ত হলে কিংবা অজানা ভাইরাসের আক্রমণ ঘটার আশঙ্কা দেখলেই আক্রান্তের নমুনা জিনোম পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রিপোর্টটিতে। কোভিডের কথা মাথায় রেখে দেশে সুসংহত ভাবে ‘ন্যাশনাল বায়োসিকিয়োরিটি অ্যান্ড বায়োসেফটি নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে স্থানীয় পর্যায়েই রোগ নির্ণয় করে রোগের প্রতিকারে গবেষণা শুরু করে দেওয়া যায়।
গবেষকদের মতে, যে কোনও সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে প্রথম একশো দিন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ভাইরাসের মোকাবিলার পথ কী হবে, সেই রূপরেখা তৈরির কাজ ওই একশো দিনের মধ্যেই সেরে ফেলার কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, সরকারকে প্রথম একশো দিনের জন্য একটি বিশদ রোডম্যাপ তৈরি করে নিতে হবে, যেখানে সংক্রমণের গতিপথ চিহ্নিত করার পাশাপাশি আক্রান্তদের ধারাবাহিক ভাবে কোথায় পরীক্ষা করা হবে, তা ঠিক করে ফেলতে হবে। কাকে নিভৃতবাস আর কাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হবে, সে সব প্রোটোকল দ্রুত শেষ করে, দ্রুত ওই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অতিমারির মতো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে মসৃণ ভাবে কাজ এগোনোর জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সুসম্পর্কের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সংক্রমণের মোকাবিলায় গবেষণা এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য একটি বিশেষ আর্থিক তহবিল গঠনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy