অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির হিংসার ঘটনায় আট জনের মৃত্যুর পর ১০ দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে টুঁ শব্দ শোনা যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখ থেকে। কিন্তু আমেরিকা সফরে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়ে গেলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। জানালেন, কৃষক হত্যার ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু একই সঙ্গে জুড়ে দিলেন বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির বিভিন্ন অশান্তির ঘটনাকে। এমনকি, এই প্রেক্ষিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকেও বিঁধতে ছাড়েননি তিনি। নির্মলার মন্তব্য, পণ্ডিত মানুষেরা অনেক সময়েই নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের মধ্যে বন্দি হয়ে থাকেন। আসল তথ্য বিশ্লেষণ করেন না। বিজেপি শাসিত রাজ্যের নয় বলে অনেক ক্ষেত্রে একই ধরনের হিংসার ঘটনাকে সামনে আনা হয় না। এই প্রবণতা ‘উদ্বেগের’।
হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুলের মোসাভর-রহমনি সেন্টার ফর বিজ়নেস অ্যান্ড গভর্নমেন্ট আয়োজিত এক আলোচনাচক্রে আমন্ত্রিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে অধ্যাপক লরেন্স সামার্স নির্মলাকে বলেন, ‘‘অধ্যাপক অমর্ত্য সেন-সহ অনেকেই ভারতে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশেষত ভারতে মোদী সরকার মুসলিমদের প্রতি যে ব্যবহার করছে, তা আমাদের চেনা ভারত এবং আমেরিকার সব মানুষকে অন্তর্ভুক্তির নীতির মধ্যে দেওয়াল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’ নির্মলার জবাব, ‘‘অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, পণ্ডিত মানুষেরা নিজেদের ভাল-মন্দের পছন্দের বৃত্তে বন্দি। বাস্তব তথ্য নয়, তাঁরা নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে মত প্রকাশ করেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, অমর্ত্যের মতো মানুষেরা নির্বিঘ্নে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যান। কোথায় কী ঘটছে দেখেন। তাঁদের তথ্যনির্ভর ব্যাখ্যা সরকারের কাজে লাগে। নির্মলার কথায়, ‘‘কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি এক জিনিস। আর তথ্যভিত্তিক ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। কেউ যদি নির্দিষ্ট ধ্যানধারণার ভিত্তিতে মন্তব্য করেন তা হলে তো কিছু বলার নেই।... কেউ যদি জেগে থেকে ঘুমের ভান করেন, তা হলে তো তাঁকে জাগানো সম্ভব নয়।’’
অমর্ত্য-সহ যে সমস্ত বিশিষ্ট মানুষ বিজেপিকে নিশানা করছেন, তাঁদের পাল্টা নিশানা করার কারণ কী? নির্মলার ব্যাখ্যা, ভারতের মতো দেশে আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারে। এমন নয় যে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে হিংসার ঘটনা ঘটে না। কিন্তু যেহেতু সেখানে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী নেই সে কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত ঘটনা প্রচারের আলোতে আসে না। অর্থমন্ত্রীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সমালোচনা করার জন্য প্রশাসন কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা দেখা যায় না। কিন্তু বিপরীত উদাহরণ একাধিক রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী ছাত্র সংগঠনেরপড়ুয়াদের বিরুদ্ধে নানা মামলা, উত্তরপ্রদেশে সংবাদকর্মী সিদ্দিক কাপ্পানের গ্রেফতারি-সহ একাধিক দৃষ্টান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy