Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
National News

ফাঁসিই কেন? প্রশ্ন উঠল ফের

মৃত্যুদণ্ডের কি আর কোনও বিকল্প নেই?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ০৪:১৫
Share: Save:

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে ফাঁসিই শ্রেষ্ঠ পন্থা বলে মনে করে কেন্দ্রীয় সরকার। নির্ভয়ার ধর্ষণ ও খুনে চার অপরাধীর ফাঁসির পরে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে, ফাঁসিতে ঝোলানোর বদলে মৃত্যুদণ্ডের কি আর কোনও বিকল্প নেই? প্রাণঘাতী-ইঞ্জেকশন দিলে কি তা আরও কম যন্ত্রণাদায়ক হয় না?

সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে মামলা চলছে। যার পরের শুনানি হতে পারে এপ্রিলে। এই মামলাতেই মোদী সরকার যুক্তি দিয়েছিল, খুন-ধর্ষণের মতো অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই ফাঁসি দেওয়া হয়। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার আগে পিছিয়ে আসে। মৃত্যুদণ্ডের প্রক্রিয়াকে একেবারে যন্ত্রণাহীন করে দিলে তা কারও মনে ভয় ধরাতে পারবে না।

আইনজীবী ঋষি মলহোত্র সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৫৪(৫) ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। ওই ধারায় বলা রয়েছে, মৃত্যুদণ্ড ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা হবে। ঋষির যুক্তি ছিল, ফাঁসিতে ঝোলানো খুবই অমানবিক ও নৃশংস। এতে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তদেরও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয়। কারণ সম্মানজনক ভাবে মৃত্যু মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।

আরও পড়ুন: ‘মনে হয়, কিছু অপরাধের এমন শাস্তিই দরকার’

ঋষি যুক্তি দেন, ১৯৮২-তে বচন সিংহ বনাম পঞ্জাব সরকার মামলায় অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে ভিন্ন মত জানিয়ে বিচারপতি পি এন ভগবতী ফাঁসিকে ‘নৃশংস ও অমানবিক’ বলেছিলেন। ফাঁসিতে ঝোলানোর পরেও শ্বাস নেওয়ার জন্য আসামি ছটফট করে। চোখ-জিভ ঠিকরে বেরিয়ে আসে। মুখের পাশ থেকে চামড়া, মাংস উঠে যায়। আইন কমিশনের ১৯৬৭-র রিপোর্ট বলে, ফাঁসিতে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ৪০ মিনিট লাগে। মারণ ইঞ্জেকশনে ৫ থেকে ৯ মিনিটে মৃত্যু হয়। এটি যন্ত্রণাহীন পথ। কারণ, অ্যানাস্থেশিয়া দিতেই অপরাধী সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। আমেরিকার কিছু প্রদেশ ও অনেক দেশে এই পথ নেওয়া হচ্ছে বলেও যুক্তি দেন ঋষি।

শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে কেন্দ্রকে অবস্থান জানাতে বলেছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শীর্ষ আদালতকে যে অবস্থানের কথা জানিয়েছে, তা হল ফায়ারিং স্কোয়াড বা মারণ ইঞ্জেকশন আরও বেশি বর্বর। আইন কমিশন ইঞ্জেকশনের পক্ষে রায় দিলেও, কেন্দ্রের বক্তব্য, ডাক্তারেরা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে অনিচ্ছুক হতে পারেন। যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা না-ও কাজ করতে পারে। ঠিক মতো শিরা খুঁজে পাওয়া বা ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ নিয়েও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এক বারে মৃত্যু না-হলে তৈরি হতে পারে বেনজির জট। তাই এমন স্পর্শকাতর বিষয় সংসদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া সঙ্গত।

জনস্বার্থ মামলাকারী যুক্তি দেন, ফাঁসির আগেই সাজাপ্রাপ্তদের উপরে মানসিক নির্যাতন হয়। এর পরে ফাঁসির প্রক্রিয়াও অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। আসামি কখন সংজ্ঞাহীন হবে, সেটা অনিশ্চিত। যদিও কেন্দ্রের বক্তব্য, ফাঁসির প্রক্রিয়া শুরুর পরেই অপরাধী সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। মৃত্যু আসে দ্রুত। বিভিন্ন দেশে ইলেকট্রিক চেয়ার, ফায়ারিং স্কোয়াড, মারণ- ইঞ্জেকশন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা খতিয়ে দেখেই ফাঁসিকে উপযুক্ত বাছা হয়েছে। সব পক্ষের মত শুনলেও এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।

অন্য বিষয়গুলি:

Nirbhaya Case Nirbhaya Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy