দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন)। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার জনের মধ্যে এই আবেদন করেছে বিনয় শর্মা। পাতিয়ালা হাউস কোর্টের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা খারিজ করার আবেদনও করেছে বিনয়। আদালত সূত্রে খবর, বিনয় তার আবেদনে উল্লেখ করেছে, সে চায় শীর্ষ আদালত যেন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হয়ে তার আর্জি শোনে। মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, সে গরিব বলেই তাকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে।

দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট দু’দিন আগেই দোষীদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে। ২২ জানুয়ারি তাদের ফাঁসি হওয়ার কথা। এই কিউরেটিভ পিটিশনের ফলে ফের এক দফা আইনি লড়াই শুরু হল।

সুপ্রিম কোর্টের রায় কোনও পক্ষের পছন্দ না হলে তাঁরা প্রথমে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে পারেন। এই মামলায় ইতিমধ্যেই সেই আর্জি খারিজ হয়েছে। যার পরের বিকল্প হিসেবে রায় সংশোধনের আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করতে পারেন কেউ। আর ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী এর পরেও শেষ বা অন্তিম বিকল্প হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে পারেন। সেই আর্জি খারিজ হলে তার পর আর ফাঁসি রদের কোনও সম্ভাবনা থাকে না।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির প্যারামেডিক্যাল ছাত্রী নির্ভয়াকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করা হয়। দুষ্কর্মের পর নির্ভয়া ও তাঁর সঙ্গী বন্ধুকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে যায় ৬ দুষ্কৃতী। সেই ঘটনায় এক জন নাবালকের বিচার হয়েছে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে। তিন বছর জেল খাটার পর সে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে। অন্য এক অভিযুক্ত বিচার চলাকালীনই তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করে। বাকি চার দোষী মুকেশ সিংহ, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয় কুমার সিংহকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও সেই সাজাই বহাল রয়েছে।

তার মধ্যেই ৭ জানুয়ারি দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট এই চার জনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে। সেই অনুযায়ী ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তিহাড় জেলে তাঁদের ফাঁসি হওয়ার কথা। কিন্তু এই কিউরেটিভ পিটিশনের রায় কী হবে এবং তার পর অভিযুক্তরা সবাই বা তাদের কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাবে কিনা তার উপরেও সেই ফাঁসি নির্ভর করবে। তা ছাড়া মৃত্যু পরোয়ানা খারিজ করার আর্জির কী রায় দেয় শীর্ষ আদালত, তার উপরেও নির্ভর করছে ফাঁসির বিষয়টি।