ফাঁসি হয়ে গেল। (বাঁ দিক থেকে) বিনয়, পবন, অক্ষয়, মুকেশ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রায় পাঁচ বছর আগে ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি রুখতে মধ্যরাতে প্রধান বিচারপতির বাড়ির দরজায় কড়া নেড়েছিলেন আইনজীবীরা। রাত সওয়া তিনটে নাগাদ সুপ্রিম কোর্টের তালা খুলে বিচারপতিরা মেমনের ফাঁসি রোখার আর্জি শুনতে বসেছিলেন।
মুম্বইয়ে ১৯৯৩-এর ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অন্যতম অপরাধী ইয়াকুবের ফাঁসি রোখা যায়নি সে রাতের সেই শেষ মুহূর্তের চেষ্টায়। ভোর রাতেই নাগপুরের জেলে ইয়াকুবের ফাঁসি হয়। বৃহস্পতিবার রাতেও নির্ভয়া-কাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি আটকানো গেল না।
বৃহস্পতিবার প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট, তার পরে রাতে দিল্লি হাইকোর্টও ফাঁসি রোখার আর্জি খারিজ করে দেয়। রাত ১২টা নাগাদ ফাঁসি রোখার আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি মনমোহন সিংহ বলেছিলেন, ‘‘অপরাধীদের সঙ্গে ঈশ্বরের দেখা হতে আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। কিন্তু মধ্যরাতে ফের সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী এ পি সিংহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের দরজায় কড়া নাড়েন। রাত আড়াইটে নাগাদ বিচারপতি আর ভানুমতী, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এ এস বোপান্না এজলাসে চলে আসেন। আদালতে পৌঁছে যান কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও।
আরও পড়ুন: ‘সে দিন যা হয়েছিল, তা শুধু আমিই জানি’
বেঞ্চের কাছে আইনজীবী এ পি সিংহ যুক্তি দেন, চার অপরাধীর অন্যতম পবন গুপ্ত ঘটনার সময়ে নাবালক ছিল। নিম্ন আদালতে ফাঁসি স্থগিত রাখার আর্জি জমা হয়েছে। অক্ষয় ঠাকুরের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে আর্জিও সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে। পবনের উপর জেলে নির্যাতন হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে মামলারও ফয়সালা হয়নি। পবনের হয়ে আর এক আইনজীবী শামস খাজা যুক্তি দেন, অল্পবয়সি পবন বয়সে বড়দের চাপে ধর্ষণে জড়িত থাকলেও খুনে অংশ নেয়নি।
কিন্তু বিচারপতিরা কোনও যুক্তিই শুনতে রাজি হননি। বিচারপতি ভানুমতী বলেন, ‘‘পবন নাবালক ছিল বলে যুক্তি আগেও আদালতে দেওয়া হয়েছে। আদালত তা খতিয়ে দেখেছে। বারবার একই যুক্তি তোলা যায় না।’’ বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, ‘‘আপনি কার্যত গোটা রায় পর্যালোচনা করতে বলছেন।’’ বিচারপতি ভানুমতী বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরে আদালতে তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সুযোগ খুবই কম।’’ পবনের দ্বিতীয় প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে মামলাও বিচারপতিরা খারিজ করে দেন। ফলে কার্যত যাবতীয় আইনি বাধাই শেষ হয়ে যায়।
ইয়াকুবের ফাঁসির আগে নিঠারি কাণ্ডের অপরাধী সুরিন্দর কোলির ফাঁসি রুখতে নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা আগে আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সে বার অবশ্য ফাঁসি স্থগিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত। নির্ভয়ার ক্ষেত্রে তা না-হওয়ায় এ পি সিংহ বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমেই পুরো বিচার হয়ে গেল।’’ বিচারপতিদের ধন্যবাদ জানিয়ে এজলাস থেকে বেরিয়ে নির্ভয়ার মা আশাদেবী বললেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে তো ওরাই প্রথমে হাজির হলেন। দেরিতে হলেও বিচার মিলল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy