মুখোশ, মাথায় কাঁটাতার বেঁধে বিক্ষোভ। শুক্রবার শ্রীনগরে। রয়টার্স
বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের কোনও খবরের কাগজের প্রথম পাতায় খবর ছিল না। ছিল জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের পাতাজোড়া একটি বিজ্ঞাপন। বাসিন্দাদের প্রতি আবেদন— সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খপ্পরে পড়বেন না, স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করুন।
প্রশ্ন উঠেছে, তবে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা বলে আসছেন— মানুষ উন্নয়নের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, কাশ্মীরে সব স্বাভাবিক? জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের ৬৭ দিন পরে, তা হলে কেন প্রশাসনকে বলতে হচ্ছে, সবাই স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করুন?
এখনও বাস চলাচল বন্ধ কাশ্মীরে। মোবাইল ফোন স্তব্ধ, ইন্টারনেট নেই। বন্ধ অধিকাংশ দোকান-বাজারও। এটিএমে টাকা নেই। অস্ত্র হাতে টহল দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। অগস্টের মাঝামাঝি স্কুল খোলার ঘোষণা করেছে প্রশাসন, কিন্তু আজও ক্লাস শুরু হয়নি। কার্যত ঘরবন্দি উপত্যকার নারী-পুরুষ আজ মন দিয়ে সরকারি
বিজ্ঞাপন পড়েছেন। তাতে লেখা, ‘‘৭০ বছরের বেশি সময় ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামাফিক অপপ্রচারের সাহায্যে তাঁদের জীবনকে সন্ত্রাস, ধ্বংস ও দারিদ্রের নিরবচ্ছিন্ন চক্রাবর্তে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। আপনারা কি তা থেকে মুক্তি চান না?’’
বিজ্ঞাপনে সরকার বলছে, ‘‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিজেদের সন্ততিদের বিদেশে পাঠিয়ে লেখাপড়া করান, আর সাধারণ ছেলে-মেয়েদের হিংসা, পাথর ছোড়া আর হরতালের পথে যেতে উত্তেজিত করেন। ফের সেই পথই নিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। আপনারা কি এখনও তা সহ্য করবেন? তাঁদের খপ্পরে পড়ে ধ্বংসকে বেছে নেবেন, না কি সাধারণ জনজীবনে ফিরবেন?’’ এর পরেই কাশ্মীরবাসীর প্রতি আবেদন— স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবনযাত্রা শুরু করুন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে উপত্যকায় ব্লক স্তরে নির্বাচনের আয়োজন করেছে প্রশাসন। বিজেপি ছাড়া কাশ্মীরের সব ক’টি দল সেই নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা করার পরে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ দিন ঘোষণা করা হয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা হবে এ মাসের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু আড়াই মাস যে স্কুল-কলেজে পড়াশোনা নেই, পাঠক্রমই শেষ হয়নি, তা নিয়ে কোনও ঘোষণা
নেই প্রশাসনের।
নির্বাচনের মতো এই পরীক্ষাও প্রহসনে পরিণত হতে চলেছে বলে মনে করছেন কাশ্মীরবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy