মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন কোমল সোনি। মাস দুয়েক আগে মিহির সোনির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমার জন্য পহেলগাঁওকেই পছন্দের তালিকার প্রথমেই রেখেছিলেন নববিবাহিত দম্পতি। কিন্তু যে অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন, তা বলতে গিয়ে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিল কোমলের।
কোমল জানান, এখনও তাঁর চোখের সামনে সেই দৃশ্য ভাসছে। আর্ত চিৎকার, গুলির আওয়াজ, রক্তে ভেজা দেহ। পহেলগাঁও হামলা থেকে বেঁচে ফেরা এই দম্পতির মধুচন্দ্রিমা যে এত বিভীষিকাময় হয়ে উঠবে, কল্পনা করতে পারেননি। যেমন পারেননি হরিয়ানার বাসিন্দা নৌসেনা অফিসার বিনয় নরওয়াল এবং তাঁর স্ত্রী হিমাংশী। সোনি দম্পতি বেঁচে ফিরলেও, স্বামীকে জীবিত ফিরিয়ে আনার সৌভাগ্য হয়নি হিমাংশীর। তাঁদেরও বিয়ে হয়েছিল গত ১৬ এপ্রিল।
কোমল বলেন, ‘‘আমি আর মিহির তখন ম্যাগি খাচ্ছিলাম। সেল্ফি তুলছিলাম। ঠিক তখনই নিস্তব্ধতা ভেঙে গুলির আওয়াজ শুনতে পেলাম। কী হচ্ছে প্রথমে তা বুঝতে পারিনি। তার পর আবার গুলির আওয়াজ। একটা, দুটো, পর পর অনেকগুলো। তার পরই দেখলাম এক এক করে লুটিয়ে পড়ছেন পর্যটকেরা।’’ কোমল আরও বলেন, ‘‘সামনে তাকিয়ে দেখি কয়েক জন বন্দুক নিয়ে গুলি চালাতে চালাতে আসছে। আর এক মুহূর্ত দেরি না করে মিহিরের হাত এক ঝটকায় টেনে নিয়ে ছুটতে শুরু করলাম।’’
জঙ্গিরা তাঁদের কাছে পৌঁছোনোর আগেই পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন সোনি দম্পতি। স্থানীয়েরা তাঁদের অভয় দিচ্ছিলেন। কিন্তু কিছুই যেন তাঁদের বিশ্বাস হচ্ছিল না। শুধু দৌড় আর দৌড়। কোমল বলেন, ‘‘ছুটতে ছুটতে দমবন্ধ হয়ে আসছিল। কিন্তু দৌড়নো থামাইনি। আমরা ভাগ্যবান। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের সহ-পর্যটকদের মৃত্যুও মনকে ভারাক্রান্ত করে তুলেছে।’’ এর পরই কোমল জানান, আর কোনও দিন কাশ্মীরে বেড়াতে যাবেন না তাঁরা। গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় হত্যালীলা চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ পর্যটকের।