প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন প্রজাতির নয়া উপপ্রজাতি বিএ.৪ ও বিএ.৫-এর উপস্থিতির সন্ধান মিলেছে দক্ষিণ ভারতে। যদিও ওমিক্রনের অন্য প্রজাতির মতোই ভারতে পাওয়া ওই নতুন দুই উপপ্রজাতি তেমন কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
চিন, হংকং ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নতুন সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফি দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ওই দেশগুলিতে। যে সংক্রমণের পিছনে ওমিক্রনের বিভিন্ন উপপ্রজাতি দায়ী থাকলেও, ভারতে অতীতে সে ভাবে ওমিক্রনের উপপ্রজাতি প্রভাব ফেলতে পারেনি, তেমনি তামিলনাড়ু ও তেলঙ্গনায় পাওয়া বিএ.৪ ও বিএ.৫ উপপ্রজাতি নিয়েও এখনই বিশেষ কোনও চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, ভারতে এখন পর্যন্ত ওমিক্রনের দু’টি উপপ্রজাতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেগুলি হল বিএ.১ ও বিএ.২। এর মধ্যে সংক্রমণের প্রশ্নে অধিক শক্তিশালী ছিল বিএ.২। দেশে যে তৃতীয় ঢেউ এসেছিল তাতে অধিকাংশ নমুনাতেই বিএ.২-এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সংক্রমণের প্রশ্নে প্রবল শক্তিশালী ওই ভাইরাস। ওই ভাইরাস আক্রান্ত এক জন ব্যক্তি ১২ জনকে সংক্রমিত করতে সক্ষম। তা সত্ত্বেও ভারতে বিশেষ কোনও ত্রাসের সঞ্চার করতে পারেনি ওই উপপ্রজাতি।
আমেরিকা বা ইউরোপের উন্নত দেশগুলি যখন একের পর এক ঢেউয়ের শিকার হচ্ছে, তখন এ দেশে ভাইরাসের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার পিছনে দু’টি কারণ রয়েছে বলে মত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের। তাঁদের বিশ্লেষণ, তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যক্তি প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় ও প্রায় ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি দেশবাসী দ্বিতীয় ডোজ় নিয়ে ফেলেছিলেন। শুধু তাই নয়, দেশের বড় সংখ্যক মানুষ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদের শরীরে এক দিকে যেমন স্বাভাবিক ভাবে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছিল, তেমনি প্রতিষেধক নেওয়ার কারণে কৃত্রিম ভাবেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা— অর্থাৎ হাইব্রিড বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। যে কারণে ওমিক্রনের বিএ.২ প্রজাতি ডেল্টার থেকেও বেশি সংক্রমক হওয়া সত্ত্বেও এ দেশে সে ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারেনি।
ভারত যখন প্রতিষেধকের জন্য অপেক্ষাকৃত স্বস্তির জায়গায়, তখন হংকং-এর পরিসংখ্যান বলছে, সে দেশের মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ টিকার দু’টি ডোজ় পেয়েছেন। ৭০ বছরের উপরে থাকা জনসংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশ, এখনও একটি ডোজ় পাননি। সেই কারণে সে দেশে ওমিক্রনের কারণে যে মৃত্যু ঘটছে তাদের অধিকাংশই হয় টিকার একটিও ডোজ় পাননি অথবা পেলেও একটি ডোজ় পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য সঞ্জয় পূজারি। এমসের কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক সঞ্জয় রাইয়ের কথায়, ‘‘দেশের বড় সংখ্যক মানুষের শরীরে এখনও করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়ে গিয়েছে। বুস্টার ডোজ় নিচ্ছেন অনেকেই। ফলে তাঁদের শরীরেও নতুন করে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই ওমিক্রনের নতুন কোনও প্রজাতি এ দেশে সংক্রমণের প্রশ্নে দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো আতঙ্কের আবহ তৈরি করতে পারবে বলে মনেহয় না।’’
তবে একই সঙ্গে যেহেতু ওই ভাইরাস এখনও সক্রিয় এবং চরিত্র পরিবর্তন করে নতুন নতুন চেহারায় আত্মপ্রকাশ করছে, তাই প্রকাশ্য স্থানে মাস্কের ব্যবহার, নিয়মিত হাত ধোওয়ার মতো করোনা বিধি মেনে চলাই শ্রেয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy