ছবি: সংগৃহীত।
পড়ুয়াদের বিক্ষোভের কারণে প্রায় আড়াই মাস বন্ধ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। এই পরিস্থিতিতে আগামী কাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সিমেস্টার শুরু হওয়ার কথা। তার আগে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের উদ্দেশে বার্তা দিতে মুখ খুললেন জেএনইউ-য়ের উপাচার্য় এম জগদেশ কুমার। বললেন, ‘‘অতীতে যা ঘটে গিয়েছে তা ভুলে বরং কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মসৃণ ভাবে চালানো যায়, তাতে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে অবশ্য তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের কোনও চিন্তাভাবনা নেই কর্তৃপক্ষের। উপচার্য অনড় থাকায় বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
গত ৭৫ দিন ধরে ধর্মঘট চলছে জেএনইউ-তে। বন্ধ গবেষণা সংক্রান্ত সমস্ত কাজ। অবিলম্বে ক্যাম্পাস চত্বরে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার একটি চাপ যে নিরপেক্ষ পড়ুয়াদের তরফে তৈরি হচ্ছে, তা টের পাচ্ছেন ছাত্র সংসদের নেতারা। সে কারণে গত কাল কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয় সংসদের পক্ষ থেকে। জানানো হয়, ১০৮ ও ১২০ টাকা দিয়ে সিমেস্টারের জন্য নাম নথিভুক্ত করবেন তারা। কিন্তু বর্ধিত হস্টেল ফি দেবেন না। ওই সিদ্ধান্তের পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছুটা নরম মনোভাব দেখাবেন, এমন আশা করেছিলেন সংসদের নেতারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে আজ মুখ খুললেও, ফি কমানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান উপাচার্য। স্পষ্ট কোনও আশ্বাসও পাওয়া যায়নি তাঁর কাছ থেকে। উপাচার্য বলেন, ‘‘ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নেওয়া হয়নি। ২০১৬ সালে এ নিয়ে যে কমিটি গড়া হয়, তারা ওয়ার্ডেনদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পরে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ ছাত্রদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরির সমালোচনা করেন রেক্টর চিন্তামণি মহাপাত্রও। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। শিক্ষকদের আটকানোর অধিকার নেই।’’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফি না-কমিয়েই কাল থেকে সিমেস্টার শুরুর প্রশ্নে অনড় দেখে আজ সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি বিবৃতি জারি করে জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্ধিত ফি না দেওয়ার যে ডাক ছাত্র সংসদ দিয়েছিল তা জারি থাকছে। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে, আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ধর্মঘট চলছে, তা চলবে। বন্ধ থাকবে নতুন সিমেস্টারের রেজিস্ট্রেশনও। এ দিকে গত রবিবারে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হওয়া সংঘর্ষের তদন্তে নেমে পুলিশ ‘ইউনিটি এগেনস্ট লেফ্ট’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের খোঁজ পেয়েছে। গত রবিবার সংঘর্ষের দিন ওই গ্রুপটি বানানো হয়েছিল। সে দিন সংঘর্ষে ওই গ্রুপের সদস্যদের হাত ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হামলায় সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বিএ (ফরাসি) কোর্সের দুই ছাত্র রোহিত সিংহ ও অক্ষত অবস্তীর নাম উঠে এসেছিল। তাঁদেরও ভূমিকাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাক্ষেত্রে ‘বাম-দূষণ’, মোদীকে চিঠি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy