উত্তেজিত জনগন। কলম্বো। ছবি পিটিআই।
শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে নির্বাচিত হওয়ার পর ভারত তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই আপৎকালীন অবস্থা চলাকালীন ভারত কোনও রাজনৈতিক দল বা নির্দিষ্ট সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বার্তা দিতে চাইছে না। বরং সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার গোপাল বাগলে টুইট করে বলেছেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, সে দেশের সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে শ্রীলঙ্কার সুস্থিতি, এবং অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন চায়।’ একই সঙ্গে সতর্ক সাউথ ব্লক এ কথাও বারবার মনে করিয়ে দিতে চাইছে, শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে নাক গলানো দিল্লির অভিপ্রেত নয়। বাগলের আরও একটি টুইট, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং আন্দাজে তৈরি করা মিডিয়া রিপোর্ট আমাদের চোখে পড়েছে। যেখানে বলা হয়েছে ভারত রাজনৈতিক স্তরে ভারত শ্রীলঙ্কার নেতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। আমরা শুধু শ্রীলঙ্কার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে রয়েছি।’
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, রনিলের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক রাজাপক্ষে পরিবারের মতো ঘনিষ্ঠ কখনওই ছিল না। বরং চিনের সামরিক আগ্রাসনের বিরোধিতাই করেছেন তিনি অতীতে। ভারতের সঙ্গে তাঁর কোনও প্রত্যক্ষ বিরোধ সামনে আসেনি। তিনি পরিচিত সুচতুর রাজনীতিবিদ হিসাবে। তাঁকে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ‘ফক্স’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। ছ’বারের প্রধানমন্ত্রিত্বই নয়, তিনি দু’দফায় প্রধান বিরোধী দলনেতা হিসাবেও কাজ করেছেন। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জে পি জয়বর্ধনের ভাগ্নে হিসাবে অল্পবয়স থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। আপাতত আইএমএফ-এর সঙ্গে দর কষকষি করাকেই পাখির চোখে হিসাবে দেখছেন রনিল।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই মুহূর্তে রনিলের সামনে তিনটি উপায় রয়েছে দীর্ঘমেয়াদে দেশকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার। প্রথমত আইএমএফ-এর কাছ থেকে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পসূচি আদায় করতে হবে অন্তত বছর পাঁচেকের মেয়াদে। এর ফলে করদান বাড়বে, সরকারের আয় বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতি কমবে। আইএমএফ-এর কর্মসূচির সঙ্গে সংযুক্ত হলে কলম্বোর পক্ষে নতুন দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সহায়তা পেতেও সুবিধা হবে। তবে আইএমএফ-এর সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসতে কিছুটা সময় লাগবে রনিল সরকারের। তাদের দেখাতে হবে যে, নিয়মিত ধার শোধ করে যাওয়ার মতো ক্ষমতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই মধ্যবর্তী সময়ে ভারত এবং ভারতের মতো বন্ধু সরকারের সহায়তার প্রয়োজন থেকেই যাবে। দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন। দেশকে বাণিজ্যের সহায়ক করে তুলতে হবে। সরকারকে বিভিন্ন বিষয় থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। ব্যাংক অব সিলোন, সিলোন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্স-এর মতো ক্ষতির বোঝা টেনে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলি বিলগ্নিকরণ করতে হবে। তৃতীয়ত মনে করা হচ্ছে, রাজনৈতিক সংস্কারেরও প্রয়োজন আছে। গোতাবায়া রাজাপক্ষে তাঁর দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ক্রমশ বাড়িয়ে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে বেড়েছে সর্বত্র রাজনৈতিক নেতাদের নাক গলানো, দুর্নীতি। অবিলম্বে সেগুলিও বন্ধ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy