ফাইল চিত্র।
রেলের মতো দেশজোড়া পরিবহণ-শৃঙ্খল অটুট রাখতে নিয়মিত তত্ত্বাবধান আবশ্যিক। আবার সেই কাজের জন্য পরিষেবা যাতে ব্যাহত না-হয়, সে-দিকে নজর রাখা সমধিক জরুরি। তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত একটি মামলায় রেল যে-পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কাজের জন্য চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ন’মাসে ৩৫ হাজারেরও বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩৫,০২৬টি ট্রেন বাতিল করায় কত যাত্রী সফরের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন, সেই তথ্য দিতে পারেনি রেল।
রেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে বাতিল হয় ২০,৯৪১টি ট্রেন। পরের ত্রৈমাসিকে বাতিল ট্রেনের সংখ্যা ৭১১৭। তারও পরের ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর) বাতিল হয় ৬৮৬৯টি ট্রেন। রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ট্রেন বাতিলের এই ধারাবাহিকতা জানুয়ারি থেকে মার্চের চলতি ত্রৈমাসিকেও অব্যাহত রয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। গত সোমবারেও সারা দেশে কুয়াশা, আবহাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ৪৯৫টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। ট্রেন বাতিলের ওই চিত্রে রেলের স্বাস্থ্য এবং যাত্রী পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
তবে রেলকর্তাদের একাংশের দাবি, ট্র্যাক, সেতু-সহ নানা ধরনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজকর্মের স্বার্থেই এই বিপুল সংখ্যক ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। অতীতের তুলনায় লাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ অনেক বেশি গতি পাওয়ায় ট্রেন বাতিলের সংখ্যা বেড়েছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে রেলের পারিকাঠামো অনেক বাড়বে বলে রেলকর্তাদের দাবি।
অতিমারির দরুন গত নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে স্বাভাবিক ভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। একই সঙ্গে ওই সময়ে প্রায় ৪০ হাজার ট্রেন দেরিতে চলেছে বলেও রেল সূত্রের খবর। এর মধ্যে মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের সংখ্যা ১৫,১৯৯ এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সংখ্যা ২৬,২৮৪। সব মিলিয়ে ৪১,৪৮৩টি ট্রেন দেরিতে চলেছে। রেল সূত্রের খবর, নভেম্বরে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার পরে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা ধাক্কা খেয়েছে। এবং ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা সব চেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে। ওই সময়ে সারা দেশে ২০,১৮৪টি ট্রেন দেরিতে চলেছে। সময়ানুবর্তিতার হার অনেক নেমে ৮৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। সময়ানুবর্তিতার খারাপ ছবির জন্য রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতিই দায়ী বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ।
পুরনো পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক কালের মধ্যে ২০১৪ সালে সব চেয়ে কম (১০১টি) ট্রেন বাতিল করতে হয়েছিল। ২০১৭ সালে সংখ্যাটি ছিল ৮২৯। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮-য় এক লাফে বাতিল ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৮৬৭। ২০১৯ সালে সংখ্যাটি ছিল ৩১৪৬। তবে রেল-কর্তৃপক্ষের দাবি, গত এক বছরে রেলের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ঘটেছে। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ২৯টি প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। তার ফলে যুক্ত হয়েছে ১০৪৪ কিলোমিটার নতুন রেলপথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy