ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী জমানায় ২০১৪ থেকে ২০১৯-এই মাত্র পাঁচ বছরে গোটা দেশে বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ৩২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
কিছু দিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা জানিয়েছেন, এই আইনের চূড়ান্ত অপব্যবহার হচ্ছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মহাত্মা গাঁধী, বাল গঙ্গাধর তিলকদের থামাতে ব্রিটিশরা ভারতীয় দণ্ডবিধির যে ১২৪ (এ) ধারা প্রয়োগ করত, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়েও সেই আইন এখনও কেন বাতিল করা হয়নি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে তথ্য জানিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ৩২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ৫৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে অসমে। গত ৬ বছরে এই ৩২৬টি মামলার মধ্যে ১৪১টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা এবং মাত্র ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে কতগুলি মামলা দায়ের করা হয়েছে, সেই তথ্য এখনও জানাতে পারেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
অসমে ৫৪টি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার মধ্যে ২৬টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং ২৫টির বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যদিও তার মধ্যে একটি মামলাতেও এই সময় কালের মধ্যে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি বলে তথ্যে জানানো হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে এই সময়কালে ৪০টি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে তাম মধ্যে ২৯টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, ১৬টি মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং মাত্র ১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
হরিয়ানায় রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ৩১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং ৬টি মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া সেষ হয়েছে। একজন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
২০১৪ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে বিহার, জম্মু-কাশ্মীর এবং কেরলে ২৫টি করে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিহার এবং কেরল তার মধ্যে একটি মামলাতেও চার্জশিট দাখিল করেনি। জম্মু-কাশ্মীর তিনটি মামলায় চার্জশিট দাখিল করলেও কেউ দোষী সাব্যস্ত হননি। এই সময়কালে উত্তরপ্রদেশে ১৭টি এবং পশ্চিমবঙ্গে ৮টি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য জানিয়েছে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে ৮টি এবং এবং পশ্চিমবঙ্গে ৫টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হলেও কেউ দোষী সাব্যস্ত হননি।
দিল্লিতে ২০১৪ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে চারটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু কোনও ঘটনাতেই চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা, সিকিম, আন্দামান ও নিকোবর, লক্ষদ্বীপ, পুদুচেরি, চণ্ডীগড়, দমন ও দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলিতে এই সময়কালে কোনও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়নি। মহারাষ্ট্রে ২০১৫ সালে, পঞ্জাবে ২০১৫ সালে এবং উত্তরাখণ্ডে ২০১৭ সালে একটি করে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়েছে, ৯৩টি। ২০১৮-য় ৭০টি, ২০১৭-য় ৫১টি, ২০১৬য় ৩৫টি, ২০১৫-য় ৩০টি এবং ২০১৪-য় ৪৭টি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy