চিঠির লেখক সমীরকে একজন ‘মনোযোগ আকর্ষণকারী’ অফিসার বলে মন্তব্য করেছেন। ফাইল চিত্র।
মাদক মামলার তদন্তকারী সমীর ওয়াংখেড়ে যে আদতে একজন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ অফিসার, তা প্রমাণ করতে কোনও কসুর করছেন না মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এনসিবি)-র কর্তা সমীরের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালে তিনি ফের অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন। এ বার নবাবের দাবি, তথাকথিত ‘ঝকঝকে কর্মজীবন’-এর আড়ালে সমীর বহু বার নিয়ম ভেঙেছেন। সমীরের পর পর নিয়ম ভাঙার ঘটনাকে ‘স্পেশাল ২৬’ বলেও কটাক্ষ করেছেন নবাব।
২৬ জন ভুয়ো তদন্তকারী অফিসারকে নিয়ে ২০১৩ সালে একটি সিনেমা হয়েছিল বলিউডে। ছবিটির নাম ছিল ‘স্পেশাল ২৬’। আয়কর অফিসারের ছদ্মবেশে ২৬ জন প্রতারকের গল্প। সমীরের ২৬টি অনিয়মকে সেই সিনেমার নামের সঙ্গে ইচ্ছে করে মিলিয়েছেন নবাব। আরিয়ানের গ্রেফতারির পর থেকে সমীরের সততা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার যখন সমীরের বিরুদ্ধে নবাব অনিয়মের অভিযোগ আনলেন, তার কয়েক ঘণ্টা পরই বম্বে হাই কোর্টে আরিয়ানের জামিন মামলার শুনানি।
Good Morning everyone,
— Nawab Malik نواب ملک नवाब मलिक (@nawabmalikncp) October 26, 2021
I am releasing soon...
'SPECIAL 26'
মঙ্গলবার সকালে কয়েকটি ধারাবাহিক টুইটে বিষয়টি প্রকাশ করেন নবাব। প্রথমে তিন লাইনের একটি টুইট করেন। সিনেমায় যেমন টিজার দেওয়া হয়, ওই টুইটটি ছিল কিছুটা সে ধরনের। সকাল সাড়ে আটটায় নবাব লেখেন, ‘সুপ্রভাত, খুব শীঘ্রই আমি ‘স্পেশাল ২৬’ প্রকাশ করতে চলেছি।’ পরের টুইটটি আসে তার ঠিক ১১ মিনিট পর। তাতে একটি চিঠির খামের ছবি। ছবিটির বর্ণনায় নবাব লেখেন, ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনসিবি আধিকারিক আমাকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। যে চিঠির বক্তব্য আমি কিছু ক্ষণের মধ্যেই টুইটারে প্রকাশ করব।’ চিঠির বক্তব্য কী, তার ইঙ্গিত দেন নবাব। টুইটারে না লিখলেও এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘চিঠিতে ২৬টি মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, যার তদন্তে সমীর যথাযথ নিয়ম মানেননি।’’ এর ঠিক এক ঘণ্টা পরে, অর্থাৎ সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে চিঠির বয়ান টুইটারে প্রকাশ করেন মন্ত্রী। যেখানে চিঠির লেখক সমীরকে একজন ‘মনোযোগ আকর্ষণকারী’ অফিসার বলে মন্তব্য করেছেন। এমনকি এ-কথাও জানিয়েছেন যে, সমীর বরাবরই চাইতেন তাঁর প্রতিটি কাজের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হোক। তা নিয়ে আলোচনা হোক। শুধু আলোচনায় থাকার জন্যই একটি মাদক মামলায় অভিযুক্তদের বয়ানে জোর করে রিয়া চক্রবর্তীর নাম ঢোকানোর নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। এমনই একে একে বিভিন্ন মামলায় সমীরের বিরুদ্ধে ২৬টি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চিঠিতে। চিঠির শেষে লেখক নিজের পরিচয় দিয়েছেন ‘এনসিবি-র অন্দরে বেইমানির বিরুদ্ধে এক সত্যিকারের দেশভক্ত’ বলে।
Envelope of the letter received by me from an unnamed NCB official.
— Nawab Malik نواب ملک नवाब मलिक (@nawabmalikncp) October 26, 2021
Contents of which I will be releasing soon on Twitter pic.twitter.com/uPAO2F5XKP
Here are the contents of the letter received by me from an unnamed NCB official.
— Nawab Malik نواب ملک नवाब मलिक (@nawabmalikncp) October 26, 2021
As a responsible citizen I will be forwarding this letter to DG Narcotics requesting him to include this letter in the investigation being conducted on Sameer Wankhede pic.twitter.com/SOClI3ntAn
গত ২ অক্টোবর মুম্বইয়ের প্রমোদতরীতে এনসিবি-র অভিযানে সমীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মাদক মামলায় শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করা থেকে মুম্বইয়ের মাদক চক্র ফাঁস করা—পুরোটাই সমীর নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। যদিও মহারাষ্ট্রের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির মন্ত্রী নবাব প্রথম থেকেই বলে আসছেন, আরিয়ানের বিরুদ্ধে তদন্ত আসলে বিজেপি এবং সমীরের মিলিত ‘চক্রান্ত’। বিজেপি-র ‘নির্দেশেই’ এমন কাজ করেছেন সমীর। ঘটনার তদন্তের বদলে ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে তাঁকে ‘বাধ্য করা হয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেন নবাব। এমনকি এনসিবি-তে সমীরের নিয়োগের নেপথ্যে যে অমিত শাহ-র ‘হাত’ ছিল তা-ও দাবি করেন নবাব। সোমবার তিনি এ –কথাও বলেন যে সমীরের কর্মজীবন শুরুই হয়েছিল মিথ্যের উপর ভিত্তি করে। ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র এবং জাতপাতের শংসাপত্র দেখিয়ে নিজেকে দলিত হিসেবে দেখিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন সমীর। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে সমীরের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তাঁকে সোমবার রাতে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে তিনি দিল্লির এনসিবি দফতরে গিয়েছেন। কেন তাঁকে জরুরি তলব করা হল, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে মাদক-মমলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন সমীর। শুধু বলেছেন, ‘‘কোনও তলব নয়, কিছু কাজের জন্য দিল্লিতে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি একশো শতাংশ সেই তদন্তে সহযোগিতা করব। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy