মায়ের ছবি পেয়ে খুশি মোদী আশীর্বাদ করছেন তরুণীকে। মঙ্গলবার শিমলায়। ছবি পিটিআই।
পিএম কেয়ার্স তহবিলের মাধ্যমে কোভিডে অনাথ হয়ে যাওয়া ছোটদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সঙ্গেই মানসিক ভাবে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে প্রত্যেক শিশুকে চিঠি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বার্তা, ‘‘আশ্বাস দিচ্ছি, এই লড়াইয়ে তোমরা একা নও, দেশ তোমাদের পাশে রয়েছে।’’
করোনাকালে বাবা-মা দু’জনকে হারিয়েছে, দেশে এমন প্রায় চার হাজার শিশুকে পিএম কেয়ার্স যোজনার আওতায় আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কাল ওই প্রকল্পের সূচনায় উপভোক্তাদের হাতে বৃত্তির চেক, ব্যাঙ্কের পাশবই, স্বাস্থ্যবিমা-সংক্রান্ত কাগজ তুলে দেওয়া হয়। ওই অনাথ শিশুদের মানসিক শক্তি জোগাতে প্রত্যেককে চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দি, ইংরেজি ও অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা— ‘‘তোমরা যাতে স্বাধীনভাবে স্বপ্ন দেখতে পারো এবং তোমাদের স্বপ্ন যাতে পূরণ হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই প্রকল্প আনা হয়েছে।’’
বাবা-মাকে হারানোর যন্ত্রণা কতটা কষ্টদায়ক, তা কী ভাবে এক সময়ে তাঁর পরিবারকেও প্রভাবিত করেছিল, সেই কথা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রায় একশো বছর আগে এখনকার মতোই অতিমারির (স্প্যানিশ ফ্লু, ১৯১৮-’২০) শিকার হয়েছিল গোটা পৃথিবী। সেই অতিমারিতে আমার মা তাঁর মাকে, অর্থাৎ আমার দিদাকে, হারান (মোদীর মা হীরাবেনের বয়স এখন ১০২ বছর)। সে সময়ে আমার মা এতটাই ছোট ছিলেন তাঁর মায়ের মুখ পর্যন্ত মনে ছিল না। আমার মা গোটা জীবন নিজের মাকে ছাড়া, মায়ের ভালবাসা ছাড়াই কাটিয়েছেন। কল্পনা করে দেখো, কী ভাবে বড় হয়েছেন তিনি!’’ চিঠিতে নিজের মায়ের ওই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সদ্য পিতৃমাতৃহারাদের উদ্দেশে মোদী লিখেছেন, ‘‘তোমাদের মনে যে যন্ত্রণা ও কষ্ট রয়েছে, আমি তা সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারছি।’’
চিঠিতে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ওই শিশু ও ছোটদের আরও দায়িত্ববান হয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন মোদী। তিনি লেখেন, ‘‘এত দিন ভাল-খারাপ, ঠিক-ভুলের পার্থক্য মা-বাবারাই বুঝিয়ে দিয়েছেন। আজ যখন তাঁরা নেই, তখন তোমাদের দায়িত্ব আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে।’’ চিঠিতে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি দেশের মানুষ যে তাদের সঙ্গে রয়েছে সেই বার্তাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘তোমাদের জীবনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণ করার ক্ষমতা কারও নেই। কিন্তু এই লড়াইয়ে তোমরা একা নও। গোটা দেশ তোমাদের পাশে রয়েছে।’’
গতকাল প্রধানমন্ত্রী পিএম কেয়ার্সের আওতায় যে যোজনাটি ঘোষণা করেন, তাতে প্রতি শিশুকে মাসিক চার হাজার টাকা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, করোনা অতিমারির সময়ে তৈরি হওয়া পিএম কেয়ার্স তহবিল তো স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও চিকিৎসা-যন্ত্রাংশ কেনার জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল। তা হলে কেন পিএম কেয়ার্সের অর্থ দিয়ে অনাথ শিশুদের সাহায্য করছে মোদী সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, দানের টাকায় গড়ে তোলা তহবিল এখন প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি মেরামত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy