মণিপুরের নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের হাতিয়ার ছিল মূলত দু’টো। নাগা চুক্তিতে মণিপুরের অঙ্গচ্ছেদের সম্ভাবনা এবং ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া নাগাদের অর্থনৈতিক অবরোধ। আজ মণিপুর নির্বাচনের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের দিকেই ঘুরিয়ে দিলেন অভিযোগের জোড়া ফলা। জানালেন নাগা চুক্তি নিয়ে মিথ্যে বোঝাচ্ছে কংগ্রেস। আর অবরোধের জন্য দায়ী রাজ্যের শাসক দলই।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মণিপুরে এসে ঘোষণা করেছিলেন, নাগা চুক্তিতে মণিপুর ভাগ হবে না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও গত কাল নাগাদের আশ্বাস দেন, তাঁদের মত না মেনে চুক্তি চূড়ান্ত হবে না।
কিন্তু গত কাল বেসুরে কথা বলতে শুরু করে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএনআই-এম। তাদের সঙ্গেই মণিপুর চুক্তির প্রস্তাবনা স্বাক্ষরিত হয়েছে। ওই সংগঠন দাবি করে, কেন্দ্র তাদের দাবি মেনে নিয়েও এখন
পাশ কাটাচ্ছে। সুযোগ বুঝে মুখ খোলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহও।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির পক্ষে জনমত টেনে আনা মোদীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ দিন ইম্ফলের জনসভা সফল করতে মোদীর সঙ্গেই দিল্লি থেকে আসেন জিতেন্দ্র সিংহ, প্রকাশ জাভড়েকর-সহ এক ঝাঁক নেতা-মন্ত্রী। মঞ্চে বিজেপি নেতাদের পাশে মণিপুরের রাজা লেইসেম্বা সানাজাওবাকে বসিয়ে ধার ও ভার আরও বাড়ায় তারা।
মাথায় মণিপুরি মুকুট, পরনে স্থানীয় জোব্বা, মালা, উত্তরীয় পরে মেইতেই ভাষায় বক্তৃতা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, মাঠ উপছে পড়া ভিড়ই বলে দিচ্ছে এ বারের দোল উৎসবে নতুন রং আসবে রাজ্যে। হবে পরিবর্তন। গত ১৫ বছরে শিক্ষা, সড়ক, স্বাস্থ্য, বেকারি-সব দিক থেকে কংগ্রেস শাসন মণিপুরকে কত নীচে নামিয়েছে সেই ছবি তুলে ধরেন মোদী। প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় এলে ১৫ মাসের মধ্যে কংগ্রেসের চেয়ে বেশি কাজ করে দেখাবে বিজেপি।
নাগা চুক্তি নিয়ে ইবোবির বক্তব্যকে উড়িয়ে মোদী বলেন, "দেড় বছর আগে চুক্তি হয়েছে। এত দিন কি ইবোবি ঘুমোচ্ছিলেন? কেন কেন্দ্রকে চিঠি লিখে সব স্পষ্ট জানতে চাননি?’’ মোদীর দাবি, ভোটের মুখে নাগা চুক্তি নিয়ে মিথ্যে বলে ভাইয়ে-ভাইয়ে লড়াই বাধাতে চাইছেন ইবোবি সিংহ। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘নাগা চুক্তির কোথাও মণিপুর ভাগ করা বা মণিপুরবাসীর অধিকার খর্ব করার উল্লেখমাত্র নেই। অথচ মুখ্যমন্ত্রী নাগাড়ে মিথ্যে বোঝাচ্ছেন। মিথ্যেবাদীকে বিশ্বাস করবেন না।" এই ঘোষণার পরে জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ে। অবশ্য কেন্দ্র ও বিজেপি এও জানে, এই ঘোষণা নাগা সংগঠনগুলিকে তীব্র নেতিবাচক বার্তা দেবে। সেই ধাক্কাও সামলাতে হবে। তাঁদের।
মোদী দাবি করেন, ‘‘অবরোধ হলে তা ওঠানো এবং মানুষের কাছে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। অথচ এখানে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের উপরে দায় ঠেলে নিশ্চিন্তে তিন মাস বসে আছেন।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কংগ্রেসের সঙ্গে অবরোধকারীদের গোপন আঁতাঁত রয়েছে। ভোটে জিততে মানুষকে পণবন্দি, ক্ষুধার্ত রাখা হচ্ছে। মদত দেওয়া হচ্ছে কালোবাজারিতে। মোদীর ভরসা, বিজেপি ক্ষমতায় এলে সকলকে সমান চোখে দেখা হবে। সকলের অধিকার রক্ষা পাবে। অবরোধমুক্ত হবে রাজ্য।
সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মোদীকে জবাব দিয়েছেন ওক্রাম ইবোবি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘নাগা চুক্তিতে মণিপুরের কথা না থাকলে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন?’’ মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘মোদী বলছেন বিজেপি ক্ষমতায় এলে অবরোধ উঠে যাবে। কার সঙ্গে কার আঁতাঁত আছে বোঝাই যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy