বিয়ার গ্রিলসের টুইট থেকে নেওয়া ছবি।
হেলিকপ্টার থেকে নামলেন নরেন্দ্র মোদী। এগোলেন গাড়িতে। দেখা হল ডিসকভারি চ্যানেলের বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে। শুধু প্রকৃতি সংরক্ষণের কথা নয়, মোদী নিজে থেকেই বার্তা দিলেন পর্যটকদের। প্রথমেই মনে করিয়ে দিলেন, বিশ্বের কাছে কেন এটা এত আকর্ষণের জায়গা। এক, পাহাড়, প্রকৃতি, নদী, হ্রদ, যাঁরা উপভোগ করেন তাদের জন্য এটা এক ‘শানদার’ জায়গা। দুই, যাঁরা বনস্পতির বিবিধতা সম্পর্কে আগ্রহী, তাঁদের জন্যও বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্র এই বনাঞ্চল। বেয়ার ফের বললেন, ‘‘উত্তরাখণ্ডে জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে তো হিংস্র পশু আছে। বাঘ আছে।’’ মোদীর জবাব, ‘‘আমরা প্রকৃতির সঙ্গে তালমিল রেখে চললে বন্য পশুও কিছু করবে না।’’
বেয়ার: শৈশব কোথায় কেটেছে?
মোদী: গুজরাতে এক ছোট এলাকায় জন্মেছি। ছোট পরিবারে জন্ম। ভাল ছাত্র ছিলাম না। সাবান কেনার ক্ষমতা ছিল না। বৃষ্টি পড়লে লবণের স্তর তৈরি হত। তা দিয়ে স্নান করতাম। কাপড় কাচতাম। এ ভাবে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে বড় হয়েছি।
পথে হাতির মলের গোলা তুলে মোদীকে শোঁকালেন বেয়ার। বললেন, ‘‘বেশ টাটকা। এর গন্ধ মশা আসতে দেয় না। আগে এক বার এর রস চিপে তেষ্টা মিটিয়েছি (সঙ্গে দেখানো হল ভিডিয়ো ক্লিপ)। আপনাকে বলছি না।’’
বেয়ার: ছোটবেলা থেকেই এমন চমকদার পোশাক পরতেন?
মোদী: স্কুলে যেতাম ফিটফাট। তামার ঘটিতে কয়লা ভরে ইস্ত্রি করতাম। বাবাকে সাহায্য করতাম। স্টেশনে চা বিক্রি করতাম। হিমালয়ে কাটিয়েছি অনেক বছর। আজও সেটাই শক্তি দেয়।
মেঘ ডাকছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। জঙ্গল পেরিয়ে দু’জনে জলের কাছে। বেয়ার তুললেন মায়ের প্রসঙ্গ। মোদী জানান, মায়ের ৯৭ বছর বয়স। এখনও নিজের সব কাজ নিজেই করেন। বেয়ারের সংযোজন, ‘‘মা তো মা-ই হয়। আমার ছবি দেখে বলে, আগে চুলটা কেন আঁচড়ে নিসনি।’’
এর পরে ক্যামেরায় মুখ বাড়িয়ে বেয়ারের স্বগতোক্তি বা অ্যাঙ্করিং, ‘‘যত বারই ওঁকে নিজের কথা বলতে
বলছি, তত বারই ভারতের কথা বলছেন। পশ্চিমে আমরা সবাই নিজের কথাই ভাবি।’’ অনুষ্ঠানের নাম ‘ম্যান ভার্সাস ওয়াইল্ড’। মোদীর কিন্তু উল্টো সুর। বলতে থাকেন, ‘‘যখনই প্রকৃতির সঙ্গে সংঘর্ষের কথা বলি, সেখান থেকেই ভুলের শুরু। আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। তবু প্রথম বৃষ্টি হলে, প্রচুর পোস্টকার্ড কিনে বাবা আত্মীয়স্বজনকে চিঠি লিখতেন— আজ আমাদের এখানে বৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে এমনই সম্পর্ক আমাদের। গাছ কাটতে দেওয়া হত না। কারণ গাছের প্রাণ আছে।’’
ভেলায় মোদী বসে। র্যাফট ঠেলে এগোলেন বেয়ার। বললেন, ‘‘দুই নদীর সংযোগস্থলের জায়গাটাকে ভয় পাচ্ছি।’’ নির্বিকার মোদী। বললেন, ‘‘ছোটবেলা এ ভাবেই কেটেছে। ভয় পাই না।’’ বেয়ার প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রসঙ্গ তুলতেই মোদীর জবাব, ‘‘এটা প্রত্যেক মানুষের দায়িত্ব। ভারতে তো প্রতিটি গাছকে ভগবান মানা হয়। প্রকৃতিকে ভালবেসে চলতে হবে।’’
পরক্ষণেই মোদীর মন পর্যটন বাণিজ্যে। বললেন, ‘‘যুব সমাজ যখন এটা দেখবে, ভারতকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy