—ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের হেলাফেলা না করে তাঁদের বক্তব্য শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। সংসদে আরও বেশি উপস্থিতি প্রয়োজন তাঁর। নিজের লেখা শেষ বইয়ে নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে এমনই বার্তা দিয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা দীর্ঘদিনের সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিই প্রশাসনিক কাজকর্মে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
গত ৩১ অগস্ট মারা গিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার আগে ২০১২ থেকে ’১৭ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজের কার্যকাল নিয়ে ‘দ্য প্রেসিডেনশিয়াল ইয়ার্স, ২০১২-২০১৭’ বইটি লেখা শেষ করেন তিনি। মঙ্গলবার সেই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই বর্তমান সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তাঁর মতামত উঠে এসেছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির লেখায়, ‘দ্বিতীয় দফায় পূর্বসূরির থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সংসদে উপস্থিতি বাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বগুণ সকলের সামনে তুলে ধরতে পারেন। তাতে প্রথম দফায় যে সংসদীয় সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে, তার মুখোমুখি অন্তত হতে হবে না। জওহরলাল নেহরু হন বা ইন্দিরা গাঁধী, অটলবিহারি বাজপেয়ী অথবা মনমোহন সিংহ, এঁরা সকলেই কিন্তু সংসদে নিজেদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন’।
বিরোধীদের ওজর আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে গত কয়েক বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রণবের বক্তব্য, ‘বিরোধীদের বক্তব্য অবশ্যই শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। সংসদে আরও বেশি করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরা উচিত। সংসদের মতো ফোরামকে ব্যবহার করে নিজের মতামত যেমন জানাতে পারেন, তেমনই সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে বিরোধীদেরও সন্তুষ্ট করতে পারেন। আবার দেশবাসীর কাছে সঠিক তথ্যও পৌঁছে দিতে পারেন’। ওই প্রসঙ্গে পূর্বতন ইউপিএ জমানায় নিজের ভূমিকার কথাও টেনে এনেছেন প্রণব। জানিয়েছেন, সেইসময় সর্বদা বিরোধী নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইউপিএ এবং এনডিএ— দুই শিবিরের অভিজ্ঞ নেতাদের মতামতই নিতেন।
আরও পড়ুন: দেশে মোট মৃত্যু দেড় লক্ষ ছাড়াল, নিয়ন্ত্রণে দৈনিক সংক্রমণও
আরও পড়ুন: ফের উত্তরপ্রদেশ, যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে পাঁজর ভেঙে খুন গণধর্ষিতাকে
বস্তুত, জীবৎকালেও মোদী সরকারকে একই পরামর্শ দিতে দেখা গিয়েছিল প্রণবকে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলাকালীন ২০১৯-এর ডিসেম্বরে অটলবিহারি বাজপেয়ীর স্মৃতিচারণের সভায় প্রণব বলেছিলেন, ‘‘নিজের ৪৮ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সংখ্যাগরিষ্ঠতা স্থিতিশীল সরকার গড়ার অধিকার দিলেও সকলের সঙ্গে মিলেমিশেই কাজ করতে হয়। সংসদীয় গণতন্ত্র অনুযায়ী বিরোধী-সহ সকলের মতামত মেনেই চলতে হয় সরকারকে। যে সরকারই তার উল্টো পথে হেঁটেছে ভোটাররা তাদের শাস্তি দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy