ছবি: পিটিআই।
পরিযায়ী শ্রমিকের ক্ষতে প্রলেপ। সেই সঙ্গে অকালি দল সদ্য বেসুরো গাওয়ার পরে বিহারে শরিকের হাত আরও শক্ত করে চেপে ধরা। ভোটমুখী ওই রাজ্যের জন্য আজ কোশী রেল মহাসেতু-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে বক্তৃতার সুর এই ‘দোতারা’তেই বাঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই শরিক নেতা নীতীশ কুমার ও রামবিলাস পাসোয়ানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি।
কৃষি-বিলকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানিতে অকালি দলের মন্ত্রী মন্ত্রিসভা ত্যাগের পরে বিহারে আর এক শরিক জেডিইউ-এর হাত শক্ত করে ধরতে চেয়েছেন মোদী। মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে কোশী রেল সেতু প্রকল্পের আজ উদ্বোধন হল, তার শিলান্যাস প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। নীতীশই তখন রেলমন্ত্রী। বার বার ফিরে গিয়েছেন সেই নব্বইয়ের দশক থেকে বিজেপি-জেডিইউয়ের দীর্ঘ বোঝাপড়ায়। দাবি করেছেন, ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ইউপিএ সরকার গড়িমসি না-করলে, এই সেতু তৈরি হয়ে যেত অনেক আগেই। আর এক শরিক এলজেপি-র নেতা রামবিলাস পাসোয়ানকেও ‘সফল’ রেলমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মসৃণ জোটের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশও বলেছেন, ‘‘অটলজির মন্ত্রিসভায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নিজের স্বপ্নের প্রকল্প শেষমেশ মোদীর হাতে উদ্বোধন হচ্ছে, এতেই তিনি আনন্দিত।’’
বিহারে কুর্সি ধরে রাখাকে পাখির চোখ করে দফায় দফায় প্রকল্প ঘোষণা এবং উদ্বোধন করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজকের অনুষ্ঠানে সেই পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গ তুললেন তিনি। দাবি করলেন, কোশী রেল সেতু তৈরির শেষ দিকের কাজে বড় ভূমিকা রয়েছে ভিন্ রাজ্য থেকে বিহারে ফেরা শ্রমিকদের।
লকডাউনের সময়ে কাজ খুইয়ে বাড়ির পথ ধরা কত জন পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তাতেই মারা গিয়েছেন, সেই বিষয়ে কোনও তথ্য না-থাকার কথা সোমবার সংসদে কবুল করেছে কেন্দ্র। করোনার কারণে কত জন পরিযায়ী কর্মী কাজ হারিয়েছেন, সেই সম্পর্কেও কেন্দ্রের কাছে পরিসংখ্যান না-থাকার কথা মেনে নিয়েছে শ্রম মন্ত্রক। অথচ এই শ্রমিকদের এক বড় অংশের বাড়ি বিহারে। আচমকা ঘোষিত লকডাউনে বিপর্যস্ত হওয়ার চাপা ক্ষোভ তাঁরা ভোটযন্ত্র উজাড় করে দিতে পারেন বলে আশঙ্কা এনডিএ নেতৃত্বের। বিরোধীদের দাবি, সেই ভয়েই বার বার তাঁদের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন মোদী। বার বার তাঁর মুখে উঠে আসছে দেশ গড়তে বিহারি শ্রম ও প্রতিভার প্রসঙ্গ।
বিষয়টি নিয়ে বিহারে শাসক জোট কতখানি স্পর্শকাতর, তা আরও স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের কথায়। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী বলেন, এই করোনা-কালে রেল মন্ত্রক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন না-চালালে, বিহারে নিজের বাড়িতে ফিরতে পারতেন না ১৯ থেকে ২২ লক্ষ প্রবাসী শ্রমিক। আর নীতীশের প্রতিক্রিয়া, “উপমুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার করজোড়ে অনুরোধ প্রবাসী শ্রমিক না-বলার। যে ২৩ লক্ষ মতো কর্মী বাইরে থেকে ফিরেছেন, তাঁরাও তো এ দেশেরই।”
কৃষি-বিলকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক বিক্ষোভ যে বিহারেও ছাপ ফেলতে পারে, তা আঁচ করে সে বিষয়ে বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুলেছেন মোদী। তাঁর দাবি, নয়া বিল কার্যকর হলে ফসলের ভাল দাম পাবেন কৃষক। মোদীর অভিযোগ, ফড়েদের স্বার্থরক্ষার্থে কৃষকদের ভুল বোঝাতে চান বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy