অতিথি: হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। শনিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই
গত নভেম্বরে গোতাবায়া রাজাপক্ষে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কলম্বো নীতি নিয়ে নড়ে বসেছিল নয়াদিল্লি। স্থির হয়, চিন-ঘনিষ্ঠ এই নতুন সরকারকে নিজেদের হাতে রাখার জন্য বাড়তি পদক্ষেপ করা হবে। সেই উদ্যোগকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে আজ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত কালই মাহিন্দা পাঁচ দিনের ভারত সফরে দিল্লি পৌঁছেছেন। বৈঠকের পর যে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তাতে সন্ত্রাসবাদকে দু’দেশেরই সমান চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, দু’দেশের মধ্যে অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ‘যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্প’ নিয়ে কথা হয়েছে রাজাপক্ষে এবং মোদীর মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ, পর্যটন বাড়ানো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’’ শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করে
আজ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘মর্মবিদারক এবং বর্বরোচিত জঙ্গি হামলা ঘটেছিল শ্রীলঙ্কায় গত বছর ইস্টার ডে-তে। এটা শুধু শ্রীলঙ্কার উপরেই হামলা নয়, গোটা মানবজাতির উপরেই আক্রমণ।’’ শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে চল্লিশ কোটি ডলার কম সুদে ঋণ ঘোষণার পাশাপাশি সন্ত্রাস দমনের জন্য পৃথক ভাবে পাঁচ কোটি ডলার দেওয়ার কথাও জানিয়েছে ভারত সরকার। আজ দু’দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে প্রতিনিধিস্তরের আলোচনার পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর সঙ্গেও দেখা করছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
আরও পড়ুন: আমদাবাদ ঘুরে দিল্লি আসতে চান ট্রাম্প
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, গত বছর এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর সেখানকার সিংহলি ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ চাইছিলেন, এক শক্তপোক্ত সরকার ক্ষমতায় আসুক। জয়ের পরে গোতাবায়া নিজেও স্বীকার করেছেন যে, সিংহলি ও বৌদ্ধদের সমর্থন পেলে যে জেতা সম্ভব, তা তাঁর জানাই ছিল। অর্থাৎ তামিল বা মুসলমান সম্প্রদায়ের ভোট তিনি পাবেন না, কিংবা তার প্রয়োজনও যে তাঁর ছিল না, নতুন প্রেসিডেন্টের কথাতেই তা স্পষ্ট। জয়ের পরে অবশ্য তিনি সবাইকে নিয়েই যে নতুন শ্রীলঙ্কা গড়তে চান এমন কথা বলেছেন।
কিন্তু ভারতের উদ্বেগের কারণ হল, সে দেশের সংখ্যালঘু তামিলরা ভোটের এই ফলাফলে ত্রস্ত। কারণ, গোতাবায়ার অগ্রজ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনই দেশের তামিল জঙ্গি আন্দোলনকে দমন করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুদ্ধের শেষ লগ্নে অন্তত চল্লিশ হাজার নিরপরাধ তামিল মারা পড়েছিলেন। নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, ভীতি প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটে প্রচুর। আর এ সবই ঘটেছিল গোতাবায়ার নির্দেশে। এই সরকারের চিন-ঘনিষ্ঠতার পাশাপাশি তামিল-বিরোধিতাও মোদী সরকারের কাছে রাজনৈতিক ভাবে উদ্বেগের বিষয়। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, সেই চাপ কমাতে বর্তমান শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার হাত প্রশস্ত করাটাই লক্ষ্য সাউথ ব্লকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy