‘পরীক্ষা পে চর্চা’-এ নরেন্দ্র মোদী ছবি: পিটিআই।
দেশের অনেকগুলি রাজ্যে নিজ দলের কঠিন পরীক্ষা চলছে। সেই সংঘর্ষের ময়দান থেকে দূরে বাসভবনের সবুজ লনে আজ বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে চলা ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়ে পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিয়ো মাধ্যমে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে কখনও যেন তিনি ‘তারে জমিন পর’ ছবির নিকুম্ভ স্যর, কখনও ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর রাঞ্চো! অভিভাবকদের পরামর্শ দিলেন, “নিজেদের মনস্কামনার চাপ সন্তানের উপর ফেলবেন না।”
কিছু বিষয় কঠিন লাগে বলে পড়তে ইচ্ছা করে না, উপায় কী? অন্ধ্রপ্রদেশের পুন্য শুভর এই প্রশ্নের জবাবে মোদীর পরামর্শ, ভোরে উঠে সতেজ মাথায় আগে যে বিষয় কঠিন লাগে তার চর্চা করা উচিত। তিনি নিজেও তাই করেন বলে জানিয়েছেন। “মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমাকেও অনেক কিছু শিখতে হয়েছে, পড়তে হয়েছে। আমি ভোরে উঠে দিন শুরু করি, যেগুলি আমার কাছে কঠিন বিষয় সেগুলি দিয়ে। অফিসাররাও জানেন, তাঁরা আমাকে কঠিন বিষয়ের ফাইল সকালেই দেন।” পাশাপাশি মোদীর বক্তব্য, “যাঁরা জীবনে সফল তাঁরা সব বিষয়েই সফল নন। কিন্তু যে কোনও একটি বিষয়ে তাঁদের দক্ষতা বেশি।” উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, “যদি লতা দিদি (মঙ্গেশকর)-কে কেউ বলেন এসে ভূগোল পড়াও। সেটা কি ঠিক হবে!”
আজকের বাচ্চারা জাঙ্ক ফুডের ভক্ত, সমাধান কী জানতে চাইলেন অভিভাবকরা। প্রধানমন্ত্রীর সহাস্য বক্তব্য, “এই প্রশ্নের জবাবে আমি কি মুচকি হাসব না মন খুলে হাসব সেটাই ভাবছি!” পরে অবশ্য এই বিষয়েও পরামর্শ দিতে কসুর করেননি তিনি। বলেছেন, দেশের সনাতন খাবারগুলির সম্পর্কে বাচ্চাদের সচেতন করার জন্য পরিবারের বড়দের বিভিন্ন পরিকল্পনা নিতে। এক প্রশ্নের জবাবে মোদী বলেন, দুই প্রজন্মের ফাঁক কমাতে তাঁর নিদান, বাবা মা-দেরও নিজেদের বয়স ভুলে সন্তানের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে হবে।
বাসভবনের সবুজ মাঠে, একটি বিরাট গাছের নিচে তপোবনের পরিবেশে কখনও বসে, কখনও দাঁড়িয়ে ছাত্রদের উপদেশ দিয়েছেন মোদী। পুরোটাই হয়েছে ভিডিয়ো মাধ্যমে। অসংখ্যা ক্যামেরায় ধরা হয়েছে তাঁকে, পিছনে সমানে বেজেছে মৃদু বাজনা। প্রশ্নকর্তা ছাত্র এবং অভিভাবকেরা ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু-সহ বিভিন্ন রাজ্যের। ব্যারাকপুর সেন্ট্রাল মডেল স্কুলের শ্রেয়ান রায় যেমন জানতে চাইল একটি মৌলিক প্রশ্ন, “পরীক্ষার ফলাফল ভাল না হলেই কি শেষ হয়ে যাবে জীবন?” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ছাত্রটি যদি তাঁর ‘একজাম ওয়ারিয়ার’ বইটি পড়ত, তা হলে এই প্রশ্নই করত না! তাঁর কথায়, “অবশ্য এই প্রশ্ন বারবার উঠবে আর বারবারই তার জবাব দিতে হবে। জীবনে পরীক্ষার নম্বর ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনের পরিমাপ নয়। দেশে বা বিদেশে এমন অনেককে দেখা যায়, যাঁদের পরীক্ষার নম্বর ভাল নয়, কিন্তু নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।” ‘ডেস্টিনেশন ফিভার’ বলে একটি অসুখের কথাও আজ উল্লেখ করেছেন মোদী। অর্থাৎ কোনও বন্ধু বা আত্মীয় কোনও বিষয় নিয়ে, কোনও জায়গায় গিয়ে ভাল করছে বলে নিজেও চোখ নাকমুখ বন্ধ করে সে দিকেই ছোটা। এ ব্যাপারে সামাজিক চাপই ছাত্রদের ত্রাসের মধ্যে ঠেলে দেয় বলে মনে করেন মোদী। তাঁর মতে, “সমাজের চাপ থেকে বেরিয়ে এসে নিজের আসল ক্ষমতা জানানোর জন্য ময়দানে নামা উচিত।”
অন্য একটি পরীক্ষার জন্য দেশের ছাত্রদের আজ আহ্বান জানিয়েছেন মোদী তাঁর এই অনুষ্ঠানে। সেটি হল ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার পরীক্ষা। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ বার্তা প্রচারের পরীক্ষা। “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তোমরা যে যে জিনিস ব্যবহার করছ তার একটা তালিকা বানাও। দেখ তার মধ্যে কতগুলি বিদেশে তৈরি আর কোনগুলিতে দেশের মাটির সুগন্ধ লেগে রয়েছে”, পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর। পাশাপাশি স্বাধীনতার ৭৫ বছরের উৎসবে সমস্ত ছাত্রকে যুক্ত হতেও ডাক দিয়েছেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy