ফাইল চিত্র।
সংসদে নরেন্দ্র মোদী সরকার আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করিয়ে নিচ্ছে, অধিকাংশ বিলই সংসদীয় কমিটিতে আলোচনার জন্য পাঠানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। সেই সমালোচনায় যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসও।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার তথ্য বলছে, রাজ্য বিধানসভাতেই ২০২১ সালে সব বিলই এক দিনের মধ্যে পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। যার অর্থ, কোনও বিলই চুলচেরা বিচারের জন্য বিধানসভার স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়নি। শুধু তা-ই নয়। বিধানসভার অধিবেশন ডাকার ক্ষেত্রেও তৃণমূল সরকারের অনীহা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, গত বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ১৯ দিন বিধানসভার অধিবেশন চলেছে।
একা তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গ নয়। বিজেপি, কংগ্রেস বা আঞ্চলিক দল, সব দলের রাজ্যেই বিধানসভার অধিবেশন চালানো বা আলোচনা করে বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে। আজ পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ সংস্থা ২০২১-এ রাজ্যের বিধানসভাগুলির কাজকর্মের বার্ষিক পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট বলছে, ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৭টি রাজ্যে ২০ দিন বা তারও কম বিধানসভার অধিবেশন চলেছে। এর মধ্যে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা যেমন রয়েছে, তেমনই কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ় রয়েছে। গত বছর পর্যন্ত কংগ্রেসের দখলে থাকা পঞ্জাবও রয়েছে। আঞ্চলিক দল শাসিত পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, দিল্লিও এর ব্যতিক্রম নয়। বাম শাসিত কেরলে ৬১ দিন অধিবেশন চলেছে। কিন্তু কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার এক বছরে ১৪৪টি অধ্যাদেশ জারি করেছে।
বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রেও একই চিত্র। পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১-এ রাজ্যগুলির বিধানসভায় যত বিল পাশ হয়েছে, তার শতকরা ৪৪ ভাগ বিলই এক দিনের মধ্যে পাশ হয়ে গিয়েছে। ১০ শতাংশেরও কম বিল কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে আবার গড়ে ছ’দিনের মধ্যে রাজ্যপাল বিলে সিলমোহর দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত, বিহার, পঞ্জাব-সহ আটটি রাজ্যে গত বছর সমস্ত বিলই এক দিনে পাশ করানো হয়েছে। অর্থাৎ যে-দিন বিল বিধানসভায় পেশ হয়েছে, সেই দিনই পাশ হয়ে গিয়েছে।কোনও বিলই বিধানসভার স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, বাম আমলে বছরে অন্তত চার বার বিধানসভার অধিবেশন বসত। প্রথমে বাজেট অধিবেশন, তার পরে বর্ষার সময় বর্ধিত বাজেট অধিবেশন, পুজোর আগে একটি ছোট অধিবেশন, বছরের শেষে শীতকালীন অধিবেশন। তৃণমূল জমানায় গত ১১ বছরে বর্ষার সময়ে বর্ধিত বাজেট অধিবেশন বা পুজোর আগে অধিবেশন ডাকার প্রথা উঠেই গিয়েছে। ফলে বিভিন্ন দফতরের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আলোচনাই হয় না। কোনও বিল পাশ করানোর দরকার পড়লে তিন-চারদিনের জন্য অধিবেশন ডাকে সরকার। বহু বছর কোনও বিল নিয়ে আলোচনার জন্য সিলেক্ট কমিটি গঠন হয়নি। উল্টোদিকে সরকার পক্ষের বক্তব্য, সরকারের যেমন কাজ থাকে, সেই অনুযায়ী অধিবেশন ডাকা হয়। সব আলোচনার সুযোগই সকলকে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy