Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Business News

ধর্মের জিগিরে ব্রাত্য অর্থনীতি! মোদী সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনায় মার্কিন অর্থনীতিবিদ

স্টিভ হ্যাঙ্ক মনে করেন, মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারের সদিচ্ছাই নেই।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:২০
Share: Save:

ধর্ম, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি— এ সব বিষয়কে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ব্রাত্য হচ্ছে অর্থনীতি? নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করে সেই দিকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত করলেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ স্টিভ হ্যাঙ্ক। তাঁর মতে, কঠিন ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্কারের সদিচ্ছাই নেই মোদী সরকারের। সেই কারণেই ২০২০ সালে জিডিপি বৃদ্ধি ৫ শতাংশে নিয়ে যেতেই হিমশিম খেতে হবে ভারতকে। তার অন্যতম কারণ হিসেবে মূলধনের অভাব তথা ঋণ সঙ্কোচনের কথাও বলেছেন হাঙ্ক।

জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৪.৫ শতাংশ, যা ছ’বছরে সর্বনিম্ন। এই ফলাফল আসার আগে থেকেই অবশ্য অর্থনীতির ঝিমুনির ইঙ্গিত মিলছিল। গাড়ি শিল্পে সঙ্কট, নতুন শিল্প বিনিয়োগে ভাটা, বেকারত্ব বৃদ্ধি তথা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল ক্রমেই। তিন মাস পরেও সেই পরিস্থিতির খুব একটা রদবদল হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে, এমন ইঙ্গিতও নেই শিল্পমহলে। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই মনে করেন, বড় কোনও সংস্কারমুখী দাওয়াই ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দুষ্কর।

কিন্তু অর্থনীতিবিদ তথা প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের আর্থিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হ্যাঙ্ক মনে করেন, মোদী সরকারের সেই সদিচ্ছাই নেই। দ্বিতীয়বার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গড়েছে বিজেপি। সংখ্যার চাপও নেই। কিন্তু তার পরেও সংস্কারমুখী বড় কোনও পদক্ষেপ করেনি মোদী সরকার। হ্যাঙ্কের ব্যাখ্যা, ‘‘তার পরিবর্তে মোদী সরকার দু’টি বিষয়েই গুরুত্ব দিচ্ছে: ঐতিহ্য এবং ধর্ম, যা আসলে ধ্বংসাত্মক ও বিস্ফোরক।’’

জন হপিকন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত হ্যাঙ্কের মতে, ‘‘ভারতে আর্থিক মন্দা ‘ক্রেডিট স্কুইজ’ ঋণ সঙ্কোচনের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা আসলে ধারাবাহিক একটি সমস্যা, পরিকাঠামোগত নয়। আর সেই কারণেই ২০২০ সালে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নিয়ে যেতে অনেক লড়াই করতে হবে।’’

এই ঋণ সঙ্কোচনের অর্থ হল, ব্যাঙ্কগুলি শিল্পক্ষেত্রে ঋণ দিতে চাইছে না, বা দিলেও মাত্রাতিরিক্ত সুদ দিতে হচ্ছে। এমনিতেই নন পারফর্মিং অ্যাসেট বা এনপিএ-র ভারে ন্যুব্জ ব্যাঙ্কগুলি। বিশেষ করে সরকারি ব্যাঙ্কগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। সেই এনপিএ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাঙ্কগুলি শিল্পপতি-বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিতে চাইছে না। ফলে অবিশ্বাস ও ভয়ের বাতাবরণ ব্যাঙ্কিং মহলে। আর ঋণ না পেয়ে মুলধনের অভাবে নতুন শিল্প স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না শিল্পমহলও। তাই অর্থনীতিতে গতি আসছে না।

ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের শঙ্কা ও অবিশ্বাসের বাতাবরণ কাটাতে সিবিআই তদন্তের দাওয়াই দিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। ব্যাঙ্ক কর্তাদের আশ্বস্ত করতে সিবিআই কর্তাদের সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্তাদের এক টেবিলে নিয়ে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। হাঙ্কের মতে, এই সব পদক্ষেপে কাজ হবে না। দরকার সাহসী ও আমূল সংস্কারমুখী সিদ্ধান্ত। মোদী সরকার সেটাই করছে না বলে তোপ দেগেছেন হ্যাঙ্ক। যদিও এ নিয়ে অর্থমন্ত্রক বা সরকারের অন্য কোনও প্রতিনিধির কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

GDP Narendra Modi Nirmala Sitharaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy