ছবি: পিটিআই।
লোকসভার অধিবেশন চলাকালীনই স্পিকার ওম বিড়লা বলেছিলেন, গন্ডগোলের জেরে সভা মুলতুবি করে দেওয়া এখন ইতিহাস। লোকসভা চলতেই থাকবে। কোনও বাধা পড়বে না।
সে কথাই সত্যি প্রমাণ করে এ বারের সংসদের অধিবেশন নতুন রেকর্ড তৈরি করল। দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে প্রথম লোকসভা অধিবেশনে ৩৬টি বিল পাশ হল। ১৯৫২ সালের পর থেকে একটি লোকসভা অধিবেশনে এত বিল আর কখনও পাশ হয়নি। আজ রাজ্যসভার অধিবেশনের শেষে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যসভায় এ বারের অধিবেশনে ৩২টি বিল পাশ হয়েছে। যা গত ১৭ বছরের রেকর্ড।
বিরোধীরা বলছেন, এমন রেকর্ড তো হবেই। কারণ পাশ হওয়া একটি বিলও সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়নি। লোকসভায় এত দিন মোদী সরকারের সংখ্যার জোর থাকলেও, রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। এখন রাজ্যসভাতেও সেই বাধা নেই। তাই সংখ্যার জোরে, বিরোধীদের দাবি খারিজ করে, সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই একের পর এক বিল পাশ করিয়েছে মোদী সরকার। জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, দেউলিয়া বিধি, তথ্যের অধিকার আইনের সংশোধনী বিল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সংখ্যা বৃদ্ধি বিলগুলি আনার কোনও কথাই ছিল না। তা সত্ত্বেও এ সব বিল শুধু পেশই হয়নি। সরকার তা পাশও করিয়ে নিয়েছে।
কী হল অধিবেশনে
লোকসভা
• ৩৬টি বিল পাশ, ১৯৫২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ
• ১৯৫২-তে প্রথম লোকসভার অধিবেশনে ৩২টি বিল পাশ হয়েছিল
• ২৬৫ জন নতুন নির্বাচিত সাংসদের মধ্যে প্রায় সকলেই বলার সুযোগ পেয়েছেন
• ২৮১ ঘণ্টার অধিবেশন, নির্ধারিত সময়ের ৩৫ শতাংশ বেশি, ২০ বছরে সর্বোচ্চ
রাজ্যসভা
• গত ২০ বছরে সবথেকে ফলপ্রসূ
• গত ১৭ বছরে সবচেয়ে বেশি, ৩২টি বিল পাশ
• ১৯৫ ঘণ্টা অধিবেশন, গত ১১ বছরে সর্বোচ্চ
• নির্ধারিত সময়ের থেকে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি অধিবেশন
এ বার সংসদের অধিবেশন শুরু হয়েছিল ১৭ জুন থেকে। লোকসভার অধিবেশন শেষ হয় ৬ অগস্ট। রাজ্যসভার অধিবেশন চলল ৭ অগস্ট পর্যন্ত। লোকসভায় মোট ৩৭ দিন ধরে প্রায় ২৮১ ঘণ্টা অধিবেশন চলেছে। নির্ধারিত সময়ের থেকে ৩৫ শতাংশ বেশি। গত ২০ বছরে এত সময় ধরে লোকসভার অধিবেশন বসেনি। একই ভাবে রাজ্যসভাও চলেছে ১৯৫ ঘণ্টা ধরে। বেঙ্কাইয়ার মতে, এ হল ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।
এক সময় বাম-সহ বেশ কিছু বিরোধী দল বছরে অন্তত ১০০ দিন সংসদ চালানোর দাবি তুলতেন। তাদের অভিযোগ ছিল, শাসক দল নানা অজুহাতে সংসদকে পাশ কাটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। এ বার প্রায় দু’মাস ধরে অধিবেশন চলার পরে বিরোধীদেরই পালাই-পালাই দশা। কারণ তাঁরা দেখছেন, বিরোধীরা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। স্থানীয় সমস্যা তোলার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রশ্ন করারও সুযোগ মিলছে। কিন্তু সব কিছুর শেষে মোদী সরকার নিজের কাজ হাসিল করে বেরিয়ে যাচ্ছে।
সংখ্যার জোর নেই বলে কোনও কিছুতেই বাধা দেওয়া যাচ্ছে না। সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক বিল কোনও আলোচনা ছাড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy