প্রতীকী ছবি।
বিরোধী দল ও চিকিৎসকদের একাংশের প্রবল বিরোধিতার মুখে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলে সংশোধনী আনল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ রাজ্যসভায় বিতর্কের জবাবে ওই সংশোধনী আনার কথা জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। এর ফলে আগামী দিনে মেডিক্যাল কমিশনে রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব বাড়তে চলেছে। কমিশনের পাশাপাশি মেডিক্যাল বোর্ডগুলিতেও রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রশ্নে রাজি হয়েছে সরকার। সংশোধনী আনার ফলে ফের ওই বিল লোকসভায় পাশ করানোর জন্য পাঠাতে হবে সরকারকে।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ‘‘যেখানে সংখ্যার জোরে বিরোধীদের কথা না শুনে বিল পাশ হচ্ছে, সেখানে ওই পরিবর্তন বিরোধীদের বড় জয়।’’
দেশের মেডিক্যাল শিক্ষায় সময়োপযোগী পাঠ্যসূচি চালু করতে এই বিলটি আনা হয়েছে বলে দাবি মোদী সরকারের। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে হাতুড়ে চিকিৎসক তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিলে বলা হয়েছিল, ওই কর্মীরা নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম পাশ করতে পারলেই তাদের শংসাপত্র দেওয়া হবে। তারপরে ‘মর্ডান মেডিসিন’ দিতে পারবেন তারা। বিরোধী সাংসদদের মতে, এর ফলে হাতুড়েদের রমরমা বাড়বে। জনস্বাস্থ্য কর্মীরা কোথা থেকে, কী ভাবে, কী ধরনের শংসাপত্র পাবেন, তার ব্যাখ্যা বিলে ছিল না।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনে ২৫ জন সদস্যের মধ্যে ২১ জন চিকিৎসক। তাঁরাই ঠিক করবেন কী ধরনের পাঠ্যক্রম, কত বছর পড়ার পরে ওই কর্মীরা ওষুধ দেওয়ার দক্ষতা অর্জন করবেন।’’ ভারতের মতো দেশগুলিতে যেখানে জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসকদের সংখ্যা কম, সেখানে এই ধাঁচের জনস্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর সুপারিশ রয়েছে বলে জানান হর্ষ।
বিলে যে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল, তাতে রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব কমে যেত। জয়রাম রমেশদের মতে, এ হল যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কেন্দ্রের আঘাত। সরব হন দল নির্বিশেষে বিরোধী সাংসদেরা। শান্তনু বলেন, ‘‘ওই নিয়মের ফলে কমিশনে একটি রাজ্য ১২-১৫ বছর পর পর প্রতিনিধি পাঠাতে পারত। তাই আপত্তি ছিল রাজ্যগুলির।’’ শেষে রাজ্যগুলির প্রতিনিধি বাড়ানোর দাবি মেনে নেয় মোদী সরকার।
নতুন বিলে বেসরকারি কলেজগুলির অর্ধেক আসন গরিব ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত থাকলেও, বাকি আসনে ফি ঠিক করার ক্ষমতা কলেজগুলিকে দিয়েছিল সরকার। এর ফলে কলেজগুলিতে বড় অঙ্কের অনুদান দিয়ে শুধুমাত্র ধনী পরিবারের সন্তানেরাই সুযোগ পাবেন বলে সরব হন বিরোধীরা। আজ তাতেও কিছুটা পরিবর্তন এনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, কলেজগুলির পরিচালন ব্যবস্থায় রাজ্যের ভূমিকা থাকবে।
ওই বিলের প্রতিবাদে দিল্লিতে আজও চিকিৎসকদের একাংশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মূল ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। একাধিক হাসপাতালের বর্হিবিভাগ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান চিকিৎসকেরা। বিলের প্রতিবাদে আগামিকাল দেশে ‘কালা দিবস’ পালনের ডাক দিয়েছে ডিএসও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy