ছবি: পিটিআই।
তিন বিতর্কিত আইন নিয়ে তিন আশ্বাসে চাষিদের ক্ষোভের আগুনে জল ঢালার চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী। ফের আশ্বাস দিলেন সরকারের তরফে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) ফসল কেনার পদ্ধতি বহাল রাখার। তবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধী শিবিরের দাবি, কৃষকদের আশ্বাস দিলেও, আদতে মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানিদের মতো শিল্পপতিদের সুবিধা করে দিতে এই আইন চালু করতে মরিয়া সরকার।
রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশে এপিএমসি-র মাধ্যমে মান্ডিতে ফসল বিক্রির রেওয়াজ বহু বছরের। তার পরিকাঠামোকে পোক্ত করতে গত ছ’বছরে ২,৫০০ কোটি টাকা ঢালা হয়েছে। দেশের সমস্ত মান্ডিকে জোড়া হচ্ছে বৈদ্যুতিন জাতীয় কৃষি বাজার ই-নামের সঙ্গে। নতুন আইনে লক্ষ্য, প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে ওই ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ করে তোলা।” তাঁর আশ্বাস, “এমএসপি এবং তার মাধ্যমে সরকারের তরফে ফসল কেনা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।…তাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আরও উন্নততর উপায়ে আগামী দিনেও যাতে তা বহাল থাকে, তার জন্য আমরা দায়বদ্ধ।” অর্থাৎ মোদীর মতে, মান্ডিকে পোক্ত করার পাশাপাশি নিজেদের সুবিধেমতো খোলা বাজারে ফসল বিক্রির রাস্তা কৃষকদের জন্য খুলে দিচ্ছে সরকার। যাতে বিশেষত ছোট চাষিদের ফড়েদের উপরে নির্ভরতা কমে।
বিরোধীদের প্রশ্ন, নতুন আইনে চাষিরা উপকৃত হলে, দেশের নানা প্রান্তে তাঁরা প্রতিবাদে রাস্তায় কেন? রাহুলের প্রশ্ন, “যে চাষিরা ফড়েদের সঙ্গে দর কষাকষিতে পারেন না, তাঁরা পেল্লাই দেশি সংস্থা কিংবা বহুজাতিকের সঙ্গে দামের পাঞ্জা কষবেন কী ভাবে?” যোগেন্দ্র যাদব-সহ অনেকেরই বক্তব্য, “ফসলের ভাল দাম পাওয়ানোই যদি কেন্দ্রের উদ্দেশ্য হয়, তা হলে আইনে লেখা হোক যে, খোলা বাজারে চাষিদের থেকে ফসল কিনতে হলে, এমএসপি-র থেকে কম দর দেওয়া যাবে না। কিন্তু মোদী সরকার তা মানতে নারাজ!”
আরও পড়ুন: মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: মোদী
মোদীর দ্বিতীয় দাবি, অত্যাবশ্যক পণ্য আইন শিথিল হওয়ায় আগামী দিনে বিপুল বেসরকারি লগ্নি আসবে কৃষিপণ্য মজুতের পরিকাঠামো নির্মাণে। কমবে ফসল নষ্টের সমস্যা। আর তৃতীয় আশ্বাস, “চুক্তিচাষের দৌলতে বীজ, সার, যন্ত্রপাতি সরবরাহের দায় বর্তাবে সংস্থার কাঁধে। মাঝখানে চাষি চুক্তি ভাঙতে চাইলে, জরিমানা দিতে হবে না। কিন্তু তা করতে গেলে, জরিমানা গুনতে হবে সংস্থাকে। আর চুক্তি যেহে তু শুধু উৎপাদিত ফসলের বিষয়ে, তাই জমি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।”
বিরোধীদের অভিযোগ, অত্যাবশ্যক পণ্য আইন শিথিল করে দেওয়ার কারণে অনেক বেশি দামে নিজেদের সংসার চালানোর আনাজ কিনতে হবে চাষি-সহ দরিদ্রদের। আর চুক্তিচাষের প্রসঙ্গে যোগেন্দ্রর অভিযোগ, “প্রথমে মোটা মুনাফার লোভ দেখিয়ে চাষ করাতে শুরু করে, পরবর্তী কালে জলের দরে ফসল বেচতে বাধ্য করার নজির বহু রয়েছে। যেমন, পঞ্জাবে এ জন্য ভুগতে হয়েছে বহু আলুচাষিকে।” আইন ফেরানোর ডাকে ২৬ নভেম্বর সারা দেশের চাষিরা ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে যোগ দেবেন বলেও তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy