নরেন্দ্র মোদী। ছবি—পিটিআই।
সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিতে করোনা-সঙ্কটের মোকাবিলায় ও প্রতিষেধক সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার ডাক দিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত ও ভারত মহাসাগরীয় বেশ কিছু দেশের স্বাস্থ্যসচিবদের নিয়ে ডাকা বৈঠকে ওই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিনিধিরাও। করোনা সঙ্কটকে কেন্দ্র করে আজ ভারত যে ভাবে ফের সার্কের মঞ্চকে চাঙ্গা করে তুলতে চাইল, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
কোভিডের মতো অতিমারির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্ক ও সম-মনোভাবাপন্ন দেশগুলির মধ্যে আরও বেশি করে সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে আজ মন্তব্য করেন মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, পাকিস্তান, মলদ্বীপ, আফগানিস্তান ছাড়াও সেশেলস ও মরিশাসের স্বাস্থ্যকর্তারা। ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য-প্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অধিকাংশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই প্রান্তে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় কোভিড অতিমারিতে মৃত্যুহার প্রবল হবে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, বিশ্বের অন্য প্রান্তের তুলনায় এশিয়ার এই অংশে বরং মৃত্যুহার অনেক কম।’’
আগামী দিনে এই ধরনের অতিমারি বা স্বাস্থ্য-সঙ্কটের বিষয়ে একাধিক সুপারিশ করেছেন মোদী। প্রথমত, এই দেশগুলির মধ্যে চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য বিশেষ ভিসার ব্যবস্থা করা হোক, যাতে কোনও দেশে কোনও স্বাস্থ্য-সঙ্কট দেখা গেলে সেই দেশের অনুরোধে অন্য দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরা দ্রুত সেখানে পৌঁছতে পারেন। দ্বিতীয়ত, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে দেশগুলির মধ্যে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবস্থা চালু করা হোক। তৃতীয়ত, আলাদা আলাদা দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড প্রতিষেধক কেমন কাজ করছে, সেই তথ্য পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হোক। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে পাকিস্তানও। বৈঠকে উপস্থিত পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধি আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়টি আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে আগামী দিনে সুসংহত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। করোনার মতো অতিমারির মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা যে প্রয়োজন, তা মেনে নিয়েছে সব দেশ। কেন্দ্রীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান বাদে বৈঠকে উপস্থিত সব দেশই প্রতিষেধক ও ওষুধ দিয়ে সাহায্য করার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিবদের বৈঠকে কেন এ ভাবে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখলেন, তা নিয়ে যথারীতি প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের মতে, করোনা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে গত কয়েক বছর ধরে কার্যত গুরুত্ব হারানো সার্ক-এ নতুন করে প্রাণসঞ্চার করতে সক্রিয় নয়াদিল্লি। সেই কারণে এই সঙ্কটের একেবারে গোড়ায় করোনা মোকাবিলায় একটি সার্ক তহবিল গড়েছিল ভারত। তা ছাড়া নিয়মিত সার্ক দেশগুলিকে করোনা মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ জুগিয়ে এসেছে এ দেশ। পরবর্তী সময়ে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে প্রতিষেধকও। এ সবেরই অঙ্গ হিসেবে ও একই সঙ্গে সার্কের পূর্ব-প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনতে আজ এ ভাবে নিজে উদ্যোগী হয়ে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন বলেই মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy