ফাইল ছবি
বিদেশ সফরে গিয়ে দেশের বিরোধীদের বিশেষত কংগ্রেসকে গালমন্দ করার যে সংস্কৃতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চালু করেছেন, জার্মানিতেও তার ব্যতিক্রম হল না। তাঁর আমলে দেশবাসী সরকারি প্রকল্পে কতটা উপকৃত সেই ফিরিস্তি দিতে গিয়ে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর একটি বহু চর্চিত মন্তব্য টেনে আনলেন মোদী। বললেন,‘‘ওটা কোন হাত ছিল যা ৮৫ পয়সা নিয়ে যেত?’’ যার তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রাজীব গান্ধী এক বার বলেছিলেন, দিল্লি থেকে ১ টাকা পাঠালে ১৫ পয়সা আমজনতার হাতে পৌঁছয়। দুর্নীতির প্রশ্নে কংগ্রেসকে বিদ্ধ করতে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে বহু বার অস্ত্র করেছে মোদী এবং তাঁর দল বিজেপি। এ বার জার্মানির মাটিতেও রাজীবের সেই মন্তব্যকে আবার ব্যবহার করলেন প্রধানমন্ত্রী। বার্লিনে ১৬০০ প্রবাসী ভারতীয়দের সামনে এক অনুষ্ঠানে মোদী গত কাল বলেন, ‘‘ওটা কার হাত ছিল যে ৮৫ পয়সা নিয়ে যেত। গত ৮ বছরে সরাসরি জনগণের হাতে পয়সা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। এখন কোনও প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হবে না, আমি দিল্লি থেকে ১ টাকা পাঠাই, কিন্তু জনগণের কাছে পৌঁছয় ১৫ পয়সা।’’
১৫ পয়সার উদাহরণ দেওয়ার সময়ে প্রধানমন্ত্রী হাতের কব্জি (মোদী বলেছেন, ‘কৌন পঞ্জা’) দেখিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, হাতের কব্জি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রকারান্তরে কংগ্রেসের (কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক ‘হাত’) দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। বিশ্লেষকদের ওই অংশের মতে, বিদেশে গিয়ে ঘরোয়া রাজনীতির কথা বলা অনুচিত। কিন্তু মোদী এ সবের তোয়াক্কা করছেন না। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, একের পর এক নির্বাচনে ধরাশায়ী কংগ্রেস। শতাব্দী প্রাচীন দলটির পিঠ কার্যত দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও বিদেশে গিয়ে কংগ্রেসকে কেন নিশানা করতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর?
রাজীব গান্ধীরে মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে কংগ্রেসকে খোঁচা দেওয়া মোদীর সমালোচনায় সরব সনিয়া গান্ধীর দল। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘নিজের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় অন্য দেশে গিয়ে তুলছেন প্রধানমন্ত্রী। পূর্বতন সরকারের সমালোচনা করছেন। এটা ঠিক কাজ নয়। আমরাও যদি একই কাজ করি, তা হলে অবস্থাটা কী হবে? নিজেদের খামতি, দোষ-ত্রুটি আড়াল করতে অন্যকে ছোট করা কোনও দেশের পক্ষেই মঙ্গলজনক নয়।’’
কংগ্রেস মনে করিয়ে দিচ্ছে, মনমোহন সিংহ সরকারের আমলেই বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে সরাসরি জনগণের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। সেই সময় মোদীর দলই ওই ব্যবস্থার বিরোধিতা করে বলেছিল, ‘ভোটের জন্য ঘুষ দেওয়া হচ্ছে’। পরে বিজেপি সরকার গড়লে কংগ্রেস আমলের ব্যবস্থাই চালু রেখেছে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘আমাদের আমলের ব্যবস্থা চালু রেখে আমাদের সরকারকে হেয় করে নিজের কৃতিত্ব নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
বার্লিনের সভায় মোদীকে নিয়ে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে উৎসাহের খামতি ছিল না। ‘মোদী মোদী’ ধ্বনির পাশাপাশি, ‘টোয়েন্টি-টোয়েন্টিফোর, মোদী ওয়ান্স মোর’(২০২৪ সালেও মোদীকে চাই) স্লোগানও উঠেছে দর্শকাসন থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy