ফাইল চিত্র।
আগামিকাল বিহারের দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর দ্বৈরথ। তৃতীয় পর্বে ভোট যেখানে, সেই ফারবিসগঞ্জ ও সহরসায় দু’টি জনসভা করবেন মোদী। রাহুলের পাল্টা সভা মুসাপুর ও কিশনগঞ্জে। অনেকই বলছেন, তৃতীয় দফার ভোটের জন্য প্রচার চালালেও দুই নেতার উদ্দেশ্য, দ্বিতীয় দফার ভোটের হাওয়া আরও গরম করে দেওয়া। প্রথম দফার ভোটের দিনও বিহারে পৌঁছে মোদী ও রাহুল দ্বিতীয় পর্বের প্রচার শুরু করেছিলেন।
মোদীর আগামিকালের সভার আগেই অবশ্য জেল থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ। গত কাল আরজেডি-র শক্ত ঘাঁটি ছপরায় গিয়ে মোদী দাবি করেছিলেন, বিহার ও কেন্দ্রে এনডিএ-র ডাবল ইঞ্জিনের সরকার উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধ। বিপরীতে রাহুল গাঁধী ও তেজস্বী যাদবের মতো ‘দুই যুবরাজ’ বিহারের উন্নয়নের প্রতি উদাসীন, তাঁরা নিজেদের সিংহাসন বাঁচাতেই ব্যস্ত। এর পরেই টুইটারে লালু লিখেছেন, বিহার ও কেন্দ্রের সরকার ‘ডাবল ইঞ্জিনের নয়, ট্রাবল ইঞ্জিনের’। মোদী ও নীতীশ কুমারের উদ্দেশে আরজেডি নেতার প্রশ্ন, ‘‘লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকেরা যখন বিভিন্ন রাজ্যে আটকে ছিলেন, ডাবল ইঞ্জিন কোথায় ছিল?’’ লালু টেনে এনেছেন মোদীর ঘোষণা করা লকডাউনে পরিযায়ীদের দুর্দশা ও তাঁদের প্রতি এনডিএ সরকারের সমবেদনাহীন মনোভাবের প্রসঙ্গ।
বিহারে ভোটের হাওয়ায় নেতাদের তরজাও প্রবল। লালু-পুত্র তেজস্বী ও প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ ভোট প্রচারের শুরু থেকেই নীতীশ সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতিকে তুলে ধরছিলেন। সেই সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে টুইটারে নীতীশ আজ লিখেছেন, ‘‘যাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে সব পেয়েছেন, তাঁদের কোনও ধারনা নেই যে কাজের মানুষদের কতটা লড়াই করতে হয়। বিহারের জন্য আমি সব কিছু ত্যাগ করেছি। কাজই আমার সাধনা।’’ তেজস্বী পাল্টা বলেছেন, ‘‘বিহারের প্রশাসন চালাতে পারছেন না উনি।... মানুষকে আমরা একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য বলছি। নীতীশ ১৫ বছরে যা করতে পারেননি, সেটা করে দেখাব। এই সরকারের যাওয়ার সময়ও এসে গিয়েছে।’’ আর নীতীশকে পাঠানো চিঠিতে এলজেপি নেতা চিরাগ লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আমার বাবার শেষ দিনগুলিকে নিয়ে আপনি হঠাৎ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উনি যখন বেঁচে ছিলেন, কোনও খোঁজখবর নেননি। অবাক করার মতো ব্যাপার হল, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই যখন বাবার শারীরিক অবস্থা জানতেন, আপনাকে দেখে মনে হত কিছুই জানেন না।’’ নীতীশকে চিরাগের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এখন জনসভা করছেন আপনি। আমার বাবার কথা তাঁকে জিজ্ঞাসা করবেন। কারণ, বাবার সঙ্গে তিনি শেষ সময় পর্যন্ত ছিলেন।’’
আরও পড়ুন: বিহারে দ্বিতীয় দফার ভোট মঙ্গলবার, ৯৪ আসনে লড়াই
আরও পড়ুন: অরুণাচল সীমান্ত পর্যন্ত রেল প্রকল্প ঘোষণা চিনের, নজর রাখছে দিল্লি
চিরাগের এই চিঠি দেওয়ার কারণও রয়েছে। তার কিছু ক্ষণ আগেই এনডিএ শরিক হিন্দুস্তানী আওয়াম মোর্চার নেতা জিতনরাম মান্ঝি প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যু নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলেন। চিরাগের দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। এ নিয়ে মোদীকে চিঠি লিখেছেন মান্ঝি। তাঁর দলের মুখপাত্র দানিস রিজওয়ান বলেন, ‘‘রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যু ও চিরাগের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।’’ কী কারণে হাসপাতাল থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মান্ঝির দল। বাবার মৃত্যুর পরে চিরাগের
হাসিখুশি চেহারার একটি ভিডিয়ো সামনে এনে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে তারা। চিরাগ অবশ্য মনে করছেন, এ সবের পিছনে নীতীশের হাত রয়েছে। সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। মান্ঝির বিতর্কিত চিঠি নিয়ে রামবিলাস-পুত্র বলেন, ‘‘এ সবের পিছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের লজ্জিত হওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy