Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
All Party Meet

সর্বদল বৈঠকে বিরোধী প্রশ্নে কেন্দ্র নীরবই

রেওয়াজ অনুযায়ী প্রত্যেক বারেই সংসদ শুরুর আগে সর্বদলীয় বৈঠকে একটু দেরিতে হলেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আজকের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী অথবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেউই আসেননি।

সর্বদলীয় বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

সর্বদলীয় বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০০
Share: Save:

সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগের দিন প্রথামাফিক সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্র, কিন্তু আস্তিনের তাস দেখাল না। এর আগে লোকসভার সচিবালয় বুলেটিনে জানিয়ে দিয়েছিল অধিবেশনের ‘আংশিক’ কার্যবিবরণী। ‘আংশিক’ কারণ, ওই বুলেটিনেই লেখা ছিল, এই তালিকা ‘অসম্পূর্ণ’। গত কয়েক দিন এবং আজ বিরোধীরা সর্বদলীয় বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছে, কেন এই গোপনীয়তা? সূত্রের খবর, জবাবে মৌনতা ছাড়া কিছুই মেলেনি সরকার পক্ষের কাছ থেকে।

রেওয়াজ অনুযায়ী প্রত্যেক বারেই সংসদ শুরুর আগে সর্বদলীয় বৈঠকে একটু দেরিতে হলেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আজকের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী অথবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেউই আসেননি। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

বৈঠকের পরে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “আপাতত আজকের বৈঠক দেখে মনে হচ্ছে, অন্যান্য অধিবেশনের মতোই হবে। আমাদের তরফ থেকে আলোচ্য বিষয়গুলির আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু এর পরে কোনও চমক আছে কিনা, তা এখনই বলা মুশকিল। এই সরকারকে বিশ্বাস নেই। এরা যা কিছু জুড়ে দিতে পারে।” তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বৈঠকের পরে বলেন, “একটি দিনই আলোচনার জন্য রাখা হয়েছে। আমরা দাবি জানিয়েছি, সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। মূল্যবৃদ্ধি, বেহাল অর্থনীতি, বেকারত্ব, রাজ্যের বকেয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।” এই অধিবেশনকে ‘বিশেষ অধিবেশন’ হিসাবে চিহ্নিত করেনি সরকার। অর্থাৎ একে রাখা হচ্ছে অন্য অধিবেশনগুলির শ্রেণিতেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও জ়িরো আওয়ার বা প্রশ্নোত্তর পর্ব কেন রাখা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। আজকের বৈঠকে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সব দলই সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, শাস্তিপ্রাপ্ত দুই আপ সাংসদকে অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে।

পাশাপাশি সরকার প্রস্তাবিত চারটি বিলের মধ্যে শেষ বিলটি নিয়ে আজ বিরোধীরা সরব হয়েছেন। মুখ্য ও নির্বাচন কমিশনারদের বাছাইয়ের প্রশ্নে তিন সদস্যের কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ রাখা সংক্রান্ত এই বিলটি নিয়ে গত অধিবেশনে হট্টগোলের মধ্যেই রাজ্যসভায় পেশ করেছিল সরকারপক্ষ। তৃণমূলের বক্তব্য, সামনেই ভোট। সরকার যেন এই বিল না আনে। এটি সংবিধান এবং বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিরোধী।

দু’সপ্তাহ আগে আদানি কাণ্ডে জেপিসি (যৌথ সংসদীয় কমিটি) তদন্তের দাবির পাশাপাশি মণিপুরে চার মাস ধরে চলতে থাকা হিংসা, মূল্যবৃদ্ধি থেকে হরিয়ানায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ, চিনের আগ্রাসন থেকে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপের মতো ন’টি বিষয় সংসদের এই অধিবেশনে আলোচনার দাবি জানিয়ে কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাতে ছিল জাতগণনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার দাবিও। আজকের বৈঠকে এই প্রতিটি দাবিই তুলে ধরেছেন অধীর।

স্থির আছে মঙ্গলবার গণেশ চতুর্থীর দিন সংসদে পুজো করবেন নরেন্দ্র মোদী। তার পরে নতুন ভবনে যাওয়া হবে। আজ বৈঠকে সিপিএমের পক্ষ থেকে সরকারকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংসদ সমস্ত ধর্মের মানুষের জন্যই। যদিও এর প্রতিক্রিয়া আসেনি রাজনাথের তরফে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে একটি কথাও বলার নির্দেশ রাজনাথের নেই।

নতুন সংসদ ভবনের মাথায় আজ, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের দিনেই দেশের পতাকা লাগানো হয়েছে। যা দেশবাসীকে জাতীয়তাবাদের বার্তা দেওয়ার কৌশল বলেই মনে করছেন অনেকে। শেষ মুহূর্তে বিরোধী নেতাদের এই অনুষ্ঠানের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে তাতে উপস্থিত থাকতে পারেননি অনেকেই। ছিলেন ডিএমকে-র নেতা তিরুচি শিবা। তিনি জানিয়েছেন, শুধু মন্ত্রীদেরই বসার আসন ছিল, সংসদীয় নেতাদের বসার ব্যবস্থা ছিল না সেখানে। বৈঠকের শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় সম্প্রতি কাশ্মীরে নিহত দুই সেনা ও এক পুলিশ অফিসারের স্মৃতিতে। এ বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করেন, এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লা।

অন্য বিষয়গুলি:

All Party Meet Rajnath Singh Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy