তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব৷ ফাইল চিত্র।
বন্ধ হয়ে যাওয়া নগাঁও ও কাছাড় কাগজকলের কর্মীদের বকেয়া বেতন, গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য পাওনা বাবদ ৫৭০ টাকা, বিদ্যুৎ বোর্ডের বকেয়া বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মোট ৭০০ কোটি টাকার প্যাকেজে মঞ্জুরি দিল অসম মন্ত্রিসভা। এই বকেয়া মেটানো নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলছিল টালবাহানা। রাষ্ট্রায়ত্ত কাগজ কল দু’টি চিরতরে বন্ধ করে দিতে আজ সে সব মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব৷ তিনি বলেন, “আসলে বিজেপির এক প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতার ছেলে কাছাড় কাগজ কলের জমিতে ইথানল প্রকল্প করতে চাইছেন৷ সরকারি অর্থে সব ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা৷”
ইতিমধ্যেই কর্মী সংগঠনের যৌথ মঞ্চের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বকেয়া বেতনের প্যাকেজ ও অন্যান্য শর্তে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষই। বৃহস্পতিবার ধেমাজিতে হওয়া মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে হিমন্ত জানান, কর্মী ও লিকুইডেটরের বকেয়া মেটানোর পরে দু’টি কাগজকলের মোট ৪৭০০ বিঘা জমি অসম সরকারের হবে।
সেই জমিতে ইথানল কারখানা তৈরি করতে চান কোন নেতার ছেলে? কারও নাম না করে সুস্মিতার জবাব, “তিনি এমন নেতা, যাঁকে তুষ্ট করলে পরের বারের জন্যও হিমন্তর মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাকা৷ সব বিধায়ক আপত্তি জানালেও, তিনিই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে দিতে পারবেন৷ হিমন্তের মূল লক্ষ্য এখন ২০২৬।”
শিলচরের বিজেপি সাংসদ রাজদীপ রায় অবশ্য সুস্মিতার এই সন্দেহকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়েছেন৷ তার দাবি, বিজেপি সরকার যা করে, স্বচ্ছতার সঙ্গে করে৷ দুর্নীতি, স্বজনপোষণের স্থান নেই৷ সুস্মিতার কাছে তিনি পাল্টা জানতে চান, “নিয়মনীতি মেনে কোনও নেতার ছেলে যদি এখানে শিল্প গড়ে তোলেন, তাতে আপত্তির কী?”
সুস্মিতার দাবি, উত্তর কাছাড় পার্বত্য জেলার সঙ্গে কাগজ কলের বাঁশ উৎপাদন ও কেনার যে বহু পুরনো চুক্তি রয়েছে, একে ব্যবহার করে সস্তা দরে বাঁশ কিনতে চাইছেন ওই নেতা-পুত্র৷ বাঁশ দিয়েই এখানে ইথানল তৈরি করবেন তিনি৷
কর্মচারী-অফিসারদের যৌথ মঞ্চ ৫৭০ কোটি টাকার প্যাকেজে সন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ এ নিয়ে সুস্মিতার মন্তব্য, “কাঁদায় পুঁতে দেওয়ার পর যে কারও একটা হাত পেলে সবাই উঠে আসতে চায়৷ কে পুঁতেছিল, কে হাত বাড়াল, সেটা কে আর তখন দেখে!” সন্তোষমোহল দেবের কন্যা বলেন, “সরকারি তহবিল থেকে যদি ৫৭০ কোটি টাকা দেওয়াই হবে, তা হলে আগে তা ঘোষণা হল না কেন? নিলামের আগে এই কথা জানলে তো অনেকে আসতেন কাগজ কল কিনতে৷ সে ক্ষেত্রে তাঁরা কাগজই উৎপাদন করতেন৷ কারও চাকরি যেত না৷ সুস্মিতার আক্ষেপ, অফিসার-কর্মচারীরা একে তো ৫৬ মাসের বকেয়ার মধ্যে ২৮ মাসের বেতন পাবেন, এর চেয়ে বড় প্রশ্ন, এর পরে তাঁরা কী করবেন, সে দায়িত্ব সরকার নিচ্ছে না৷
রাজ্যসভার নবীন সদস্য জানান, বিষয়টি তিনি সংসদে তুলবেন। কর্মচারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলেই হিমন্তকে যা খুশি করতে দেওয়া হবে না৷ খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই হিমন্ত বরাকবাসীর কাছে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করে দিয়েছেন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি৷ বলেন, “মোদী জনসভায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন মিল দু’টি ফের খোলা হবে৷ আর হিমন্ত জানিয়ে দিলেন, মিলগুলি আর খোলা হবে না৷”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy