Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bengaluru Daughter Killing

‘মেয়েটা খিদেয় কাঁদছিল, পয়সা ছিল না তাই মেরে ফেললাম’! পুলিশকে বয়ান গুজরাতি ইঞ্জিনিয়ারের

রাহুল বলেন, “বেশ কিছু ক্ষণ এ দিক-ও দিক গাড়ি চালিয়ে ঘোরার পর শেষমেশ বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু পাওনাদারদের অশ্রাব্য গালিগালাজ, হেনস্থা বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।”

পুলিশ গ্রেফতার করেছে রাহুল পারামার নামে গুজরাতি ইঞ্জিনিয়ারকে। ছবি: সংগৃহীত।
সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৩:২৪
Share: Save:

খিদের জ্বালায় আড়াই বছরের মেয়েটি কেঁদেই চলেছিল। পকেটে যা টাকা ছিল তা দিয়ে বিস্কুট, চকোলেট কিনে এনে দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু তাতে খিদে না মেটায় তার পরেও কাঁদছিল মেয়েটি। শেষমেশ ওকে বুকের মধ্যে জোরে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছিলেন। নিজেও আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। পুলিশকে এ কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।

রাহুল পারামার। মেয়েকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরুর কোলার থানার পুলিশ। বছর পঁয়তাল্লিশের রাহুল গুজরাতের বাসিন্দা। কিন্তু কর্মসূত্রে থাকেন বেঙ্গালুরুতে। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু সেই কাজ চলে যায়। বিটকয়েনে বিনিয়োগও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। ফলে বাজারে প্রচুর ধারদেনা করতে হয়েছিল।

পালিশ সূত্রে খবর, রাহুল আরও দাবি করেছেন যে, দেনার পরিমাণ এতটাই ছিল যে, সোনার গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল রাহুলকে। নিত্য দিন পাওনাদাররা বাড়িতে হানা দিতেন। ফলে সব মিলিয়ে দিশাহারা হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

মেয়ে জিয়াকে স্কুলে দিতে যাওয়ার নাম করে তাকে নিয়ে গাড়িতে করে ১৫ নভেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু সারাদিন কেটে যাওয়ার পরেও স্বামী-সন্তান না ফেরায় রাহুলের স্ত্রী ভব্য বাগালুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু তার পর দিনই বেঙ্গালুরু-কোলার হাইওয়ের ধারে একটি হ্রদে জিয়ার দেহ উদ্ধার হয়।

জেরায় পুলিশকে রাহুল জানিয়েছেন, ১৫ নভেম্বর সকালে বেঙ্গালুরুর আশপাশে মেয়েকে গাড়িতে নিয়ে ঘোরেন। কী ভাবে আত্মহত্যা করবেন স্থির করতে পারছিলেন না। বিশেষ করে মেয়ের সামনে আত্মহত্যা করবেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলে না। অন্য দিকে, সময়ও পেরিয়ে যাচ্ছিল। ফলে আরও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন রাহুল। তিনি বলেন, “বেশ কিছু ক্ষণ এ দিক-ও দিক গাড়ি চালিয়ে ঘোরার পর শেষমেশ বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু পাওনাদারদের অশ্রাব্য গালিগালাজ, হেনস্থা বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। তার পরই হ্রদের ধারে সন্ধ্যাবেলায় গাড়ি থামিয়েছিলাম।”

পুলিশকে তিনি আরও জানিয়েছেন, হ্রদের কাছে গাড়ি পার্ক করে সামনেরই একটি দোকান থেকে মেয়ের জন্য বিস্কুট এবং চকোলেট কিনে এনেছিলেন। পকেটে আর টাকা ছিল না তাঁর। মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে কিছু ক্ষণ খেলেনও। কিন্তু মেয়ে আবার খিদের জ্বালায় কেঁদে ওঠে। সেই জ্বালা সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে বুকের মধ্যে জোরে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে দাবি রাহুলের। এর পরই মেয়েকে নিয়ে হ্রদের জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু জল কম থাকায় বেঁচে যান।

রাহুলের কথায়, “হ্রদের জলে ঝাঁপ দিয়েও যখন কিছু হয়নি, মেয়েকে ওখানে ফেলে রেখে রাস্তায় উঠি। এক ব্যক্তিকে বলি, আমাকে বাঙ্গেরপেট স্টেশনে ছেড়ে দিতে। ভেবেছিলাম ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করব। কিন্তু তা-ও সাহসে কুলোয়নি। শেষে তামিলনাড়ুগামী ট্রেনে উঠে পড়ি।” রাহুলের দাবি কতটা সত্য, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengaluru Techie Murder daughter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy