তাঁর আধার কার্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে বেআইনি কার্যকলাপ চলছে। ফোনে এমনটাই জানানো হয়েছিল বৃদ্ধাকে। তাতে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই ভয় এবং ভুলের মাসুল গুনতে হল ২০ কোটি টাকা দিয়ে। বৃদ্ধাকে তিন মাস ধরে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর কথা বলে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারকেরা। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে।
৮৬ বছরের বৃদ্ধা মুম্বইয়ের বাসিন্দা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, গত ২৬ ডিসেম্বর তাঁর কাছে প্রতারকদের প্রথম ফোনটি এসেছিল। ফোনে পুলিশ আধিকারিকের পরিচয় দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। বৃদ্ধাকে তিনি বলেন, তাঁর মোবাইল নম্বর, আধার কার্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে বেআইনি কার্যকলাপ চলছে। আধার নম্বরের মাধ্যমে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তাতে বেআইনি উপায়ে উপার্জিত অর্থ লেনদেন করা হচ্ছে। বৃদ্ধা ওই ব্যক্তির কথা বিশ্বাস করেন সহজেই। ফোনে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে। এমনকি, বিপদে পড়তে হতে পারে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদেরও। বৃদ্ধাকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হচ্ছে বলে জানান ফোনের সেই ‘পুলিশ’। অভিযোগ, এর পর থেকে প্রতারকদের নির্দেশে দফায় দফায় টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠান বৃদ্ধা।
আরও পড়ুন:
মোট ২০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা পাঠানোর পর বৃদ্ধা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ডিসেম্বর থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত এই ফোনাফুনি চলছিল। প্রতারকেরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করায় এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য তিনি বাইরের কাউকে জানাতে পারবেন না। তা করলে তিনি নিজেই বিপদে পড়বেন। প্রতারকদের এই কথাও প্রথমে বিশ্বাস করেছিলেন বৃদ্ধা। পরে গোটা ছক বুঝতে পেরে তিনি থানায় যান। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে।
যে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বৃদ্ধার টাকা পাঠানো হয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। এখনও টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রতারক সন্দেহে কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করছে পুলিশ।
সাইবার অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ সম্পর্কে বার বার সতর্ক করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা বলছেন, ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বলে কিছু হয় না। গ্রেফতারি কখনও ‘ডিজিটাল’ হয় না। এই ধরনের ফোন পেলেই থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।