সচিন ওয়াজে।
টানা ১২ ঘণ্টা জেরা করার পর এনআইএ গ্রেফতার করল মুম্বই পুলিশের এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ সচিন ওয়াজেকে। মুকেশ অম্বানীর বাড়ির কাছে গাড়িতে বিস্ফোরক রাখার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধরা হল তাঁকে। শনিবার সারাদিন তাঁকে জেরা করার পর রাত ১১.৫০ মিনিটে গ্রেফতার করে এনআইএ। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ রবিবার বলেন, “মুকেশ অম্বানীর বাড়ির বাইরে গাড়িতে বিস্ফোরক উদ্ধার ও মনসুখ হীরেনের খুনের ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ ও এটিএস। তদন্তে যে তথ্য উঠে আসবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই প্রসঙ্গে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, “আমি বিশ্বাস করি সচিন একজন সৎ ও দক্ষ আধিকারিক। জিলেটিন স্টিক উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। একটি রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এই ঘটনার তদন্ত করে সত্যিটা সামনে আনার দায়িত্ব মুম্বই পুলিশের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই।”
২৫ ফেব্রুয়ারি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। তার ভিতরে হুমকি চিঠিও ছিল। প্রাথমিক ভাবে এই বিষয়টির তদন্ত করছিলেন মুম্বইয়ের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার সচিন ওয়াজে। পরে তাঁকে তদন্ত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই বিষয়ের তদন্তের ভার তুলে নেয় এনআইএ।
এনআইএর-র তরফ থেকে বলা হয়েছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক রাখার বিষয়ে ভূমিকা রয়েছে সচিনের। ২৮৬, ৪৬৫, ৪৭৩, ৫০৬ (২), ১২০ বি-সহ একাধিক ধারায় সচিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই মামলায় নাম জড়ানোর পর ঠাণে আদালতে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেন সচিন। কিন্তু শুক্রবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। তাঁর বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশের পরেই সচিনকে জেরা করে গ্রেফতার করে এনআইএ।
গত ৫ মার্চ ঠাণে থেকে উদ্ধার হয় অম্বানীর বাড়ির সামনে রাখা গাড়ির মালিক মনসুখ হীরেনের দেহ। এই ঘটনাতেও নাম জড়ায় সচিনের। শুক্রবার মনসুখের বাবা বিনোদ ও ছেলে মীতের বয়ান রেকর্ড করে মহারাষ্ট্র এটিএস। মনসুখের পরিবারের অভিযোগ, যে গাড়িটি অম্বানীদের বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয়েছিল, সেই গাড়িটি ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সচিন ব্যবহার করেছিলেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
মামলা চলাকালীন শনিবার সকালে নিজের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে সচিন লেখেন, ‘মনসুখের ম়ৃত্যুর ঘটনায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ঠিক ১৭ বছর আগে একই ভাবে ফাঁসিয়েছিল সিআই়ডি। এ বার গ্রেফতার করেছে এটিএস। কিন্তু সেই সময়টা অন্য রকম ছিল। হাতে ১৭ বছর ছিল। নিজের জীবনে ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু এ বার আর হাতে সময় নেই ফিরে আসার। এ বার দুনিয়াকে বিদায় জানানোর সময় এসেছে’।
সচিনকে গ্রেফতার করা হলেও এই ঘটনার জট এখনও কাটেনি। একাধিক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। যেমন মনসুখের সঙ্গে সচিনের সম্পর্ক কী? কী ভাবে মনসুখের জলপাই রঙের স্করপিও চুরি হল? কেনই বা সচিনের বিরুদ্ধে মনসুখের গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ উঠছে, এবং কে বা কারা ওই গাড়িতে বিস্ফোরপক রাখল? কে-ই বা অম্বানীদের হুমকি চিঠি দিল? এই ঘটনার পর কী ভাবেই বা মৃত্যু হল মনসুখের? মনে করা হচ্ছে, তদন্ত এগোলে এই সব প্রশ্নের উত্তর সামনে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy