Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ক্ষমা না-চাইলে শাস্তি আজমের

আজমের বিতর্কিত বক্তব্য সংসদীয় বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হলেও আজ সকালেই সুর চড়ান রমা দেবী। লোকসভার বাইরে তিনি বলেন, ‘‘অতীতেও জয়াপ্রদা সম্পর্কে কুকথা বলেছিলেন আজম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

তিন তালাক বিলের বিতর্কে গতকাল স্পিকারের আসনে থাকা বিজেপি সাংসদ রমা দেবীর উদ্দেশ্যে করা আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে শাস্তির মুখে সপা সাংসদ আজম খান। দলমত নির্বিশেষে বিরোধীরা আজমের মন্তব্যের সমালোচনায় আজ সংসদে সরব হন। প্রথমে লোকসভায় আলোচনা ও পরে স্পিকার ওম বিড়লার সর্বদলীয় বৈঠকের পর রাতে আজমকে জানানো হয়, লোকসভায় ওই মন্তব্যের জন্য সোমবার ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সপা সূত্রের খবর, সোমবার স্পিকারের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন বলে দলকে জানিয়েছেন আজম।

আজমের বিতর্কিত বক্তব্য সংসদীয় বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হলেও আজ সকালেই সুর চড়ান রমা দেবী। লোকসভার বাইরে তিনি বলেন, ‘‘অতীতেও জয়াপ্রদা সম্পর্কে কুকথা বলেছিলেন আজম। কোনও মহিলাকে সম্মান করতে জানেন না উনি। এঁদের লোকসভায় থাকার কোনও অধিকার নই। আজমকে বরখাস্ত করার জন্য স্পিকারকে আবেদন জানাচ্ছি।’’ সরব হন মায়াবতীও। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু সংসদ নয়, গোটা নারী জাতির কাছে আজমের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’ যদিও বিজেপির কটাক্ষ, মায়াবতীই জয়াপ্রদা সংক্রান্ত মন্তব্যের সময়ে নীরব ছিলেন। সে সময়ে উত্তরপ্রদেশে দু’দলের জোট ছিল বলে নারীর অপমান তখন চোখে পড়েনি দলিত নেত্রীর!

আজ লোকসভায় জিরো আওয়ার শুরু হতেই আজম খানের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে সরব হন উত্তরপ্রদেশের বদাঁয়ুর বিজেপি সাংসদ সঙ্ঘমিত্রা মৌর্য। এরপরই ওই রাজ্যেরই সাংসদ তথা বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘‘ওই মন্তব্য শুধু মহিলাদের নয়, পুরুষদের জন্যও কলঙ্ক।’’ সপা সাংসদ অখিলেশ যাদব আজমকে সমর্থন করায় সমালোচনা করেন স্মৃতি। আজ আজম-অখিলেশ লোকসভায় অনুপস্থিত থাকলেও অখিলেশ পরে জানান, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় এর থেকেও খারাপ কথা বলেন বিজেপি বিধায়কেরা।

আজমকে আক্রমণ করেন বিরোধীরাও। এনসিপির সুপ্রিয়া সুলের কথায়, ‘‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বার্তা দিতে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’ গত কাল আজমের বিতর্কিত মন্তব্যের সময়ে লোকসভায় ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘যা হয়েছে, তা আমার কাছে শিক্ষণীয় নয়। কোনও সাংসদ এ কথা বলতে পারেন না।’’ সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার টুইটে বলেন, ‘‘লোকসভাতেই যদি মহিলার সঙ্গে এমন হয়, তা হলে বাইরে কী হবে!’’ নবীন সাংসদ নুসরত জাহানের টুইট, ‘‘সংসদের মধ্যে বা বাইরে কোনও মহিলার প্রতি এমন মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।’’

সমালোচনায় পিছিয়ে ছিলেন না পুরুষ সাংসদেরা। এমআইএম দলের নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসির কথায়, ‘‘ক্ষমা চাওয়া উচিত আজম খানের।’’ তিনি জানতে চান, ‘‘বিগত সরকারের মিটু-অভিযুক্ত মন্ত্রী এম জে আকবরের বিরুদ্ধে তদন্তের কী হল?’’ কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী আজমের কড়া শাস্তির দাবি তুলে বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না, সনিয়া গাঁধীকে ইতালির কাঠপুতুল বলে হেয় করা হয়েছিল।’’ যা শুনে বিরোধিতায় সরব হয় শাসক শিবির। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন কংগ্রেস বেঞ্চের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘কড়া শাস্তির প্রশ্নে কেন এই ভিন্ন মত?’’ কংগ্রেস যে আজমের শাস্তির পক্ষে, তা বোঝাতে আজ তিনবার উঠতে হয় অধীরকে। স্বভাবতই কংগ্রেস শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, একটি বিষয় বোঝাতে কেন এত বার মুখ খুলতে হবে বিরোধী দলনেতাকে। সরকারের পক্ষ থেকে আজ প্রথমে সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল, পরে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ শাস্তির দাবি জানান। প্রয়োজনে আজমকে সাসপেন্ড করার দাবি তোলে শাসক শিবির। শেষে স্পিকার ওম বিড়লা জানান, সর্বদলীয় বৈঠকে আজমের ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Azam Khan Samajwadi Party Parliament Rama Devi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy