হিজবুল মুজাহিদিন প্রধান রিয়াজ় নাইকু। ফাইল চিত্র
খবর ছিল, দক্ষিণ কাশ্মীরের বেগপুরায় বাড়ির লোকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছে হিজবুল কমান্ডার রিয়াজ় নাইকু। কাল রাতেই অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ, সিআরপিএফ এবং ৫৫ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস। কাল শেষ রাতে অভিযান শুরু হয় পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরা, পম্পোর ও বেগপুরায়। তিন জায়গাতেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে বাহিনী। জঙ্গিদের বিচ্ছিন্ন রাখতে ও তারা যাতে স্থানীয়দের প্ররোচনা দিতে বা ঢাল না-করতে পারে, তার জন্য মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয় উপত্যকার ১০টি জেলায়।
বেগপুরায় সংঘর্ষ শুরু হয় বেলা ন’টা নাগাদ। সেখানে নাইকুর সঙ্গে আরও এক জঙ্গি নিহত হয় গুলিতে। সে নাইকুরই সহযোগী বলে মনে করা হচ্ছে। পম্পোরের এক গ্রামে মৃত্যু হয়েছে দুই জঙ্গির। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে তিন অভিযানে, নিহত হয়েছে ছয় জঙ্গি। অবন্তীপুরার গ্রামে অভিযান এখনও চলছে। তাই সেখানকার বিস্তারিত তথ্য জানায়নি প্রশাসন।
দশ ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা বেগপুরাতেই। পুলওয়ামা কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে স্কুলে অঙ্কের শিক্ষকতা করত নাইকু। প্রযুক্তির ব্যবহারে ছিল খুবই দক্ষ। সোশ্যাল সাইটে বা বার্তার অ্যাপে ইসলাম প্রচারের নামে তরুণদের মগজ ধোলাই ও সন্ত্রাসের পথে টানার কাজ চালাত সে। হিজবুলে যোগ দেয় ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। ক্রমে ক্রমে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠে। বুরহান নিহত হয় ২০১৬-তে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ইয়াসিন ইট্টু নিহত হলে, কাশ্মীরে হিজবুলের নাশকতার ভার হাতে নেয় নাইকু।
আরও পড়ুন: প্রোমোটার লবির চাপ! পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ১০টি ট্রেন বাতিল করলেন ইয়েদুরাপ্পা
পুলিশের স্পেশাল অফিসারদের হত্যা-সহ অন্তত ১১টি সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় পুলিশ খুঁজছিল নাইকুকে। পুলিশকর্মীদের ইস্তফা দিতে বাধ্য করতে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁদের পরিবারের লোকদের অপহরণ করা ছিল নাইকুর অন্যতম কৌশল। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ২০১৮-তে জম্মু-কাশ্মীরে পঞ্চায়েত ভোট বানচাল করতে প্রার্থীদের চোখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল নাইকু। আতঙ্ক ছড়াতে হিজবুলের এই কমান্ডার সেই বছরই শিউরে ওঠার মতো ভয়াবহ এক হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল। নিহত জঙ্গির জন্য ‘গান স্যালুট’-এর চলের পিছনে ছিল নাইকুর নির্দেশ। তার মৃত্যুর পরে উপত্যকায় বদলার সম্ভাবনা ঠেকাতে প্রশাসন ও বাহিনীগুলি এখন বাড়তি সতর্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy