ছবি পিটিআই।
অযোধ্যার সাকেত কলেজের মাঠ। বেলা এগারোটা। বনবন করে ঘুরতে থাকা হেলিকপ্টারের পাখাগুলি নিশ্চল হতেই নেমে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উদ্বেল জনতার উদ্দেশে নমস্কার জানিয়েই হাতে থাকা মাস্কটি পরে নিলেন। বার্তা স্পষ্ট, পরিস্থিতি যা-ই হোক, মাস্ক জরুরি। প্রধানমন্ত্রীর মাস্ক পরা শেষ হলে অভ্যর্থনার জন্য এগিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এখানেই শেষ নয়। ভূমিপুজো শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়েও করোনা সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘দো গজ কি দূরি, মাস্ক হ্যায় জরুরি’’। অতিমারির সময়ে রামমন্দিরের শিলান্যাসের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। যুক্তি ছিল, এতে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। আর সেই আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণিত করে, সামাজিক দূরত্বের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য আজ হেলিপ্যাড, রাস্তার ধারে, বাড়ির ছাদে কাতারে কাতারে লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। অধিকাংশই মাস্ক-বিহীন। থাকলেও তা ঝুলছে গলায় কিংবা থুতনিতে। গায়ে গা ঠেকিয়ে দাঁড়ানোয় পারস্পরিক দূরত্বের নিয়ম মানা হয়নি বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।
বহিরাগতদের জন্য অযোধ্যা সিল করে দেওয়া হলেও গোটা দেশ থেকেই বেশ কিছু ভক্ত আগেভাগেই শহরে ঢুকে পড়েছিলেন। তাদের একটি বড় অংশ রোজ সন্ধেয় ভিড় জমাচ্ছেন সরযূ নদীর তীরে। বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে আসা নিরাপত্তারক্ষী, বিভিন্ন প্রান্তের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি— সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে কয়েক হাজার বহিরাগত অযোধ্যায। সরকার ও ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িত থাকায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নীরব থাকলেও, ভবিষ্যতে অযোধ্যার করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সরকারের পাল্টা যুক্তি, করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাতেই খুব অল্প সংখ্যক লোককে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর তাঁরা যাতে নিয়ম মেনে চলেন, সে দিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করা যোগগুরু রামদেবকে আজ একাধিবার মাস্কবিহীন অবস্থায় টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গিয়েছে। মাস্ক ছিল না বিজেপি নেত্রী উমা ভারতীরও। মাস্ক ছাড়াই কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত সাধুসন্তদের অনেকেরই মাস্ক ছিল থুতনির কাছে। পুজো শেষে বক্তব্য রাখার জন্য মোদী মঞ্চে উঠলে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধান নৃত্যগোপাল দাস। মাস্ক না পরেই তিনি কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
দেশে সক্রিয় সংক্রমণের প্রশ্নে উত্তরপ্রদেশ পঞ্চম স্থানে। রাজ্যভিত্তিক করোনা সংক্রমণে কাল তৃতীয় স্থান ছিল যোগী-রাজ্যের। উত্তরপ্রদেশে সংক্রমিতের সংখ্যা এখন এক লক্ষেরও বেশি। অযোধ্যার পরিস্থিতিও বিশেষ ভাল নয়। ক’দিন আগেই রামের জন্ম শহরে বেশ কয়েকজন পুরোহিত ও পুলিশকর্মীর করোনা ধরা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজকের অনুষ্ঠানের পরে এখানে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy