কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্পের টাকা নয়ছয় হলে বা অনিয়ম দেখা গেলে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগের বছরে আরও কঠোর অবস্থান নিতে চাইছে মোদী সরকার। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় সরকারের বহু প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে ঠিক মতো রূপায়ণ হচ্ছে না বলেও মোদী সরকারের মন্ত্রীরা সুর চড়াবেন। সরকারি সূত্রের খবর, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি এই রণকৌশল নিয়েছিল। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গেও আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এই ‘রণকৌশল’ নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগামী মঙ্গলবার কলকাতা যাচ্ছেন। সেখানে বণিকসভার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও সাংবাদিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যেই অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে আলোচনায় লোকসভা, রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা তৃণমূল নেতৃত্বকে তুলোধনা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ‘শিল্পবিরোধী অবস্থানে’র ফলে রাজ্যের অর্থনীতির সার্বিক অধোগতি নিয়েও নির্মলা সরব হয়েছিলেন। সরকারি সূত্রের দাবি, নির্মলার পরে কেন্দ্রের অন্যান্য মন্ত্রীরাও সুর চড়াবেন। পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রতিবেশী রাজ্য থেকে নরেন্দ্র মোদীর আস্থাভাজন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সরকারি অফিসারকেও এই কাজেলাগানো হবে।
একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে তৃণমূল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার রাজনীতির অভিযোগ তুলছে। কেন্দ্রের এক মন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালও একই অভিযোগ তুলেছিলেন। তাতে লাভ হয়নি। উল্টে কেজরীওয়ালের জন্য যমুনাকে দূষণমুক্ত করার মতো কাজ আটকে রয়েছে বলে মানুষকে বুঝিয়ে বিজেপি সরকারে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও একই রণনীতির কথা ভাবা হচ্ছে। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনায় অনিয়মের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী সংসদে মিড-ডে মিল প্রকল্পেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। বঙ্গে জল জীবন মিশনে প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার কাজের গতি নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষোভ রয়েছে। সে দিকে আঙুল তোলার সঙ্গে তৃণমূলের জন্যই রাজ্যের মানুষ আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না বলেও রাজ্যের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)