ছবি: পিটিআই।
তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লির সীমানায় কৃষক আন্দোলন চলছে। অসমেও বিভিন্ন দাবিতে চলছে কৃষকদের আন্দোলন, ধর্না। কৃষকদের আন্দোলন ও ভূমিপুত্রদের অধিকারের লড়াইকে সামনে রেখেই বিজেপি-বিরোধী মহাজোট গড়েছে কংগ্রেস, এআইইউডিএফ, বাম জোট ও আঞ্চলিক গণ মোর্চা। জোট গড়ছে রাইজর দল, অসম জাতীয় পরিষদও। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের অস্ত্রকেই হাতিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অসমের শিবসাগরে, জেরেঙা পথারের জনসভায় নানা উপমা-উদাহরণ তুলে ধরে এটাই প্রমাণ করার চেষ্টা চালালেন যে অসমে ভূমিপুত্রদের জমির পাট্টাপ্রদান হোক বা বহিরাগতদের জবরদখল উচ্ছেদ— অসমবাসীর লড়াইয়ে বিপত্তারণ হতে পারে শুধুই বিজেপি।
নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে পালনের কথা ঘোষণা করে মোদী ভূপেন হাজরিকার ‘ও মোর ধরিত্রী আই’ কবিতার লাইন আওড়ে বলেন, “আমাদের জমি শুধু গাছ, মাটি, পাথর নয় মায়ের রূপ। স্বাধীনতার এত বছর পরেও এখানকার অনেক ভূমিপুত্র ভূমিহীন থেকে গিয়েছেন। বিষয়টি আগের সরকারের কাছে গুরুত্বই পায়নি। ভূমিপুত্রদের ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার রক্ষার পাশাপাশি ইতিমধ্যেই সওয়া দু’লক্ষ পরিবারকে আইনি পাট্টা দিয়েছে এই সরকার। আজ আরও লক্ষাধিক সেই তালিকায় জুড়লেন। এ বার সকলেই বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের লাভ ও জমির বিনিময়ে ঋণের সুবিধে পাবেন। ভূমিপুত্ররা হয়ে উঠবেন আত্মনির্ভর।”
বিজেপি সরকার রাজ্যের সত্র ও অরণ্যের জমি জবরদখলে কাঠগড়ায় তোলে ‘বাংলাদেশি মূল’-এর মুসলিমদের। মোদী শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নাম টেনে বলেন, “শঙ্করীধর্ম রক্ষার বদলে তাঁর জন্মস্থান বটদ্রবা ও অন্য সত্রগুলির জমি আগের সরকারের আমলে দখল হয়ে গিয়েছিল। এই সরকার সেই সব জমি দখলমুক্ত করেছে। দখলমুক্ত করা হয়েছে কাজিরাঙার জমিও।”
শিবসাগরই ছিল আহোমদের রাজধানী রংপুর। জেরেঙা পথার রানি জয়মতীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগের জন্য খ্যাত। শিবসাগরের রংঘর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ঘোষণা করে আলফার জন্ম। আহোম গর্বের সঙ্গে তাই শিবসাগরের অটুট সংযোগ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-সহ বিভিন্ন অভিযোগে জেরবার শাসকদল তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যত নির্বাচনী প্রচারের জন্য শিবসাগরকেই বেছে নিয়েছিল। উপলক্ষ, এক লক্ষ ভূমিপুত্রকে জমির পাট্টা বিলি। যাতে ভূমিপুত্রদের অধিকার কাড়ার অভিযোগের পাল্টা জবাব দেওয়া যায়।
সভার শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ভূপেন হাজরিকাকে ভারতরত্ন প্রদান ও ফুলাম গামোসাকে বিশ্বে জনপ্রিয় করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেন, জেরেঙা পথারে জয়মতী স্মারকক্ষেত্র গড়া হবে। অসমীয়ায় নববর্ষ ও বিহুর শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জেরেঙা পথারে আরও এক ইতিহাস রচনা হল। ভূমিপুত্ররা তাঁদের জমির কাঙ্ক্ষিত আইনি অধিকার পেলেন হাতে। দেশের সেরা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যক্ষেত্রের মধ্যে শিবাসাগরকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে সরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy