প্রতীকী ছবি
জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলায় জন সুরক্ষা আইনে ১৪ বছরের এক নাবালককে গ্রেফতার করে বারাণসীতে পাঠানোর অভিযোগ উঠল সেনা এবং পুলিশের বিরুদ্ধে।
কাইমো গ্রামের ওই বাসিন্দা ধৃত মহম্মদ আফতাব বাটের পরিবারের দাবি সে নাবালক। বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। তাকে হোমে পাঠানোর আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে আদালতের কাছে স্কুলের যে শংসাপত্রটি দাখিল করেছে আফতাবের পরিবার, সেটি ঠিক নয়। এই মর্মে আদালতের কাছে একটি রিপোর্টও জমা দেয় তারা। ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ শুনানির দিন, দশ দিনের মধ্যে আফতাবের আসল বয়স কত, তা নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শ্রীনগর হাইকোর্ট।
আফতাবের পরিবারের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের ঠিক তিন দিন পরে, ১১ অগস্ট রাত দু’টো নাগাদ হঠাৎ তাদের বাড়িতে হানা দেয় সেনা এবং পুলিশ। আফতাবের দিদি মাইমুনা আখতার জানান, মহিলাদের একটি ঘরে এক সঙ্গে বসতে বলে পুরুষদের বাইরে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরেই আফতাবকে তুলে নিয়ে যায় বাহিনী। মাইমুনার দাবি, ভয় ছিল বাধা দিলে হয়তো বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালাতে পারে পুলিশ। তাই তেমন কিছু করার চেষ্টা করেননি তাঁরা। পরের দিন শোপিয়ান থানায় গিয়ে পরিবারের লোকজন দেখেন রাতে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে আফতাবকে। তার সামনের একটি দাঁতও ভেঙে গিয়েছে। বাঁ কাঁধে একাধিক চোটের দাগ স্পষ্ট।
১২ অগস্ট আফতাবের পরিবারকে জানানো হয়, তাকে জনসুরক্ষা আইনে গ্রেফতার করে শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়েছে। মাইমুনার দাবি, সেখানে গিয়ে তার পরিবারের লোকজন দেখেন আফতাব নেই। জানা যায়, তাকে বারাণসীর একটি জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২৮ অগস্ট আফতাবের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে হেবিয়াস কর্পাস মামলা করে আফতাবের পরিবার। তার বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে জমা দেওয়া হয় আফতাবের স্কুলের শংসাপত্র। যেখানে লেখা আফতাবের জন্ম ১৬ মার্চ ২০০৫ সালে। আদালতের কাছে আফতাবকে তাড়াতাড়ি কোনও হোমে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানায় তার পরিবার।
যদিও এই শংসাপত্রটি মিথ্যে বলে দাবি করেন সরকারি আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, শোপিয়ানের পুলিশ সুপারের করা তদন্তে উঠে এসেছে, আদালতের কাছে যে স্কুলের শংসাপত্রটি জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল আফতাব। ভর্তির সময় আফতাবের দাদার মুখের কথা মেনে এবং তার সত্যতা যাচাই না করেই একটি জন্ম তারিখ বসিয়ে দিয়েছিল স্কুল প্রশাসন। ফলে মেডিক্যাল পরীক্ষা ছাড়া আফতাবের আসল বয়স নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
এর পরেই ২৫ সেপ্টেম্বর শ্রীনগর হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে (জুডিশিয়াল) আফতাবের আসল বয়স নির্ধারণ করতে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ১৪ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। এ দিকে ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরানোর আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছে তার পরিবার। ছেড়েছে দেখার করার আশাও। মাইমুনা জানালেন, উত্তরপ্রদেশে যাওয়া এবং থাকার খরচ প্রায় ৪০,০০০। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের অত আর্থিক সঙ্গতি কোথায়? আফতাব গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চলছে। আমাদের পক্ষে কি ওর সঙ্গে দেখা করতে বারাণসী যাওয়া সম্ভব?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy