Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

লিপিবদ্ধ হচ্ছে কবিরাজি চিকিৎসা পদ্ধতি

ত্রিপুরার ফরেস্ট রিসার্চ সেন্টার ফর লাইভলিহুড এক্সটেনশন প্রধান পবন কৌশিক জানিয়েছেন, বিভিন্ন কবিরাজের স্ব-স্ব ঘরানার চিকিৎসা পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করা হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বাপি রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৯
Share: Save:

আয়ুর্বেদ চিকিৎসার উন্নয়নে ত্রিপুরার সমস্ত কবিরাজের চিকিৎসা পদ্ধতিকে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে কবিরাজদের কাঠ থেকে প্রতিরোধ এলেও পরে তাঁদের বোঝানো হয়, কোনও এক কবিরাজের মৃত্যু হলে সেই ঘরানার চিকিৎসা পদ্ধতি লিপিবদ্ধ না থাকায় তা চিরকালের মতো হারিয়ে যায়। পরের প্রজন্মের মানুষের তা আর কাজে লাগে না। সার্বিক ভাবে মানুষের কল্যাণের কথা ভেবেই তা লিপিবদ্ধ করা উচিত।

ত্রিপুরার ফরেস্ট রিসার্চ সেন্টার ফর লাইভলিহুড এক্সটেনশন প্রধান পবন কৌশিক জানিয়েছেন, বিভিন্ন কবিরাজের স্ব-স্ব ঘরানার চিকিৎসা পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করা হবে। তাঁদের কাছ থেকে কোনও লিখিত পুঁথি ইত্যাদি পেলে তাও লিপিবদ্ধ করে তা বই আকারে প্রকাশ করা হবে। তিনি জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যে জনজাতি এলাকায় বসবাসকারী কবিরাজের সংখ্যা কমতে কমতে এখন ৫৭। ২০১৫ সালে তাঁদের নিয়ে বৈদ্যরাজ হার্বাল গ্রোয়ার্স সোসাইটি গঠন করা হয়। সম্প্রতি তাঁদেরকে চিকিৎসা পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করার এই প্রকল্পের গুরুত্ব বোঝানো হয়। কৌশিক জানান, জনজাতি এই কবিরাজদের কাছে থেকে অনেক মুল্যবান কবিরাজি বই সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে প্রাচীনতম কবিরাজি চিকিৎসা শাস্ত্র পদ্ধতি নিয়ে বিশদ ও মূল্যবান তথ্য। তাঁর মতে, অনেক ক্ষেত্রে প্রথাগত পড়াশোনা না থাকলেও পরম্পরাগত জ্ঞান নিয়ে তাঁরা ঔষধ প্রস্তুত প্রণালী এবং তার ব্যবহার বিষয় বিশদে লিখেছেন।

কিন্তু প্রথম দিকে এই প্রস্তাবে বেঁকে বসেন কবিরাজরা। তাঁদের নিজস্ব গুপ্ত পদ্ধতি প্রকাশ্যে এলে তাঁদের গুরুত্ব কমে যাবে বলে অনেকে মনে করেন। একে অপরের চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে যাবেন। মূলত এই কারণেই তাঁদের অনীহা ও সংশয় ছিল। তাঁদেরকে বলা হয়, গত বছর ৫ জন কবিরাজের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা কী ভাবে মানুষের চিকিৎসা করতেন তা তাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই হারিয়ে গেল। পরবর্তী প্রজন্মের মানুষের কোনও কাজেই এল না।

তিনি জানান, তাঁদের সংগৃহিত তথ্য ও নথি থেকে যে বই প্রকাশ করা হবে, তার মধ্যে কবিরাজদের প্রত্যেকের নিজের নামে একটি করে ‘চ্যাপ্টার’ থাকবে। আগরতলা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে গাঁধীগ্রামের শালবাগান ফরেস্ট রিসার্চ সেন্টার ফর লাইভলিহুড এক্সটেনশন অফিসে গত কয়েকদিন ধরে দল বেঁধে কবিরাজরা তাঁদের পুরনো বইপত্র নিয়ে যাচ্ছেন। মুখে মুখে বলে যাচ্ছেন নিজেদের চিকিৎসা পদ্ধতি। অফিসের কর্মীরা অনুবাদ করে পুরনো চিকিৎসা রীতি সংরক্ষণের কাজ করছেন। কৌশিক মনে করেন, এই প্রচেষ্টায় উপকৃত হবেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের গবেষণার কাজেও সহায়ক হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayurveda Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy