Meet Aaliya Sultana Bab, the Dinosaur Princess of Gujarat dgtli
National news
একার হাতে ভারতের একমাত্র জুরাসিক পার্ক তৈরি করেছেন পরভিন ববির এই আত্মীয়
আলিয়া সুলতানা ববি। বলি অভিনেত্রী পরভিন ববির আত্মীয় আলিয়ার আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি ‘ডাইনোসর প্রিন্সেস’।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ১৩:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
আলিয়া সুলতানা ববি। বলি অভিনেত্রী পরভিন ববির আত্মীয় আলিয়ার আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি ‘ডাইনোসর প্রিন্সেস’।
০২১৯
এই ধরনের নামের কারণ গুজরাতের খিরা জেলার রাইয়োলি গ্রামে বছরের পর বছর ধরে ডাইনোসরের ডিম আগলে রেখেছেন তিনি!
০৩১৯
গুজরাতের এই গ্রামেই রয়েছে ভারতের একমাত্র জুরাসিক পার্ক। বালাসিনোর ফসিলস পার্ক। সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে এখানেই ঘুরে বেড়াত ডাইনোসরের দল। মাটি খুঁড়ে এখান থেকেই উদ্ধার হয়েছিল ডাইনোসরের হাজার খানেক ডিম। মাটির গভীরে এমন আরও বহু ডিম রয়েছে এবং তা নিয়ে আজও গবেষণা চলছে।
০৪১৯
তখন থেকেই এই এলাকার রক্ষণাবেণের দায়িত্বে রয়েছেন আলিয়া। গ্রামের মানুষদের সচেতন করা থেকে শুরু করে পর্যটকদের গাইড করা সবই একা হাতে সামলান তিনি।
০৫১৯
রাজ পরিবারের মেয়ে আলিয়া গ্রামের মানুষদের কাছে তাই ‘ডাইনোসর প্রিন্সেস’।
০৬১৯
১৯৮১ সাল। শীতকাল। আলিয়া তখন অনেকটাই ছোট। জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদের একটি দল গুজরাতের রাইয়োলি গ্রামে আসে।
০৭১৯
দলটি এসেছিল এই গ্রামে খনিজের সমীক্ষা চালাতে। কিন্তু খনিজের সন্ধান করতে গিয়ে তাঁরা অদ্ভুত আকারের ফলের মতো দেখতে কিছু বিস্ময়কর পাথর খুঁজে পেলেন।
০৮১৯
পরীক্ষা করার পর জানা গেল, সেগুলো আসলে ডাইনোসরের ডিম এবং হাড়ের ভগ্নাবশেষ!
০৯১৯
গুজরাতের গ্রামে ডাইনোসরের ডিম পাওয়া যাওয়ার পর থেকেই খনন কার্য শুরু হয় জোরকদমে। এক এক করে এ রকম হাজার খানেক ডিম উদ্ধার হয় ওই গ্রাম থেকে। ডিমগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায়, অন্তত ৭ রকম প্রজাতির ডাইনোসর এই গ্রামে ঘুরে বেড়াত!
১০১৯
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ডাইনোসর হ্যাচারি ঘোষিত হয় গুজরাতের গ্রাম রাইয়োলি। মূলত বংশবিস্তার করার সময়ই দলে দলে এই এলাকায় ঘাঁটি বাঁধত ডাইনোসরেরা।
১১১৯
ডাইনোসর নিয়ে আলিয়ার মনে কৌতূহল তখন থেকেই। যত বার প্রত্নতত্ত্ববিদদের দল গবেষণার জন্য আসতেন তাঁদের পিছু পিছু আলিয়াও চলে যেতেন। কিন্তু পরে বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়ার কারণে বেশ কিছু সময় আলিয়া গ্রামে ছিলেন না। এতে যদিও তাঁর কৌতূহলে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি।
১২১৯
১৯৯৭ সালে স্কুল পাশ করে বালাসিনোরে ফেরার পর প্রত্নতত্ত্ববিদদের দলের সঙ্গে ওই জায়গা ঘুরে দেখার অনুমতি পান তিনি। প্রথম বার ওই অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইতিহাসের এত কাছে আসেন আলিয়া।
১৩১৯
‘জুরাসিক পার্ক’ ফিল্মের ভক্ত আলিয়ার কৌতূহল তখন আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। মূলত তার পর থেকেই ডাইনোসর নিয়ে তাঁর গবেষণা শুরু।
১৪১৯
যে অঞ্চলে এই ডাইনোসরের ডিম মিলেছিল আলিয়ার বাড়ি থেকে তার দূরত্ব ছিল মাত্র ১৫ মিনিটের। বাবা নবাব মহম্মদ সালাবাতখান ববির সঙ্গে প্রায়ই সেখানে যেতেন আলিয়া। পর্যটকদের ভিড় বিবেচনা করে বাবার সঙ্গে পরিকল্পনা করে তাঁদের বাড়িটিকেই হোটেল বানিয়ে ফেলেন।
১৫১৯
সে সময় ওই এলাকার একমাত্র বড় হোটেল ছিল এটিই। আমেরিকা, রাশিয়া-সহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে গবেষকরা এসে তাঁদের হোটেলেই থাকতেন। তাঁরা গবেষণার কাজে যখন যেতেন আলিয়াও তাঁদের সঙ্গে চলে যেতেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের সঙ্গে সবটা ঘুরে দেখতেন তিনি। এই ভাবেই ক্রমে আলিয়া ডাইনোসরদের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন।
১৬১৯
কিন্তু ওই এলাকার প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব যখন সামনে এল আশেপাশের মানুষেরা সেখান থেকে পাথর চুরি করতে শুরু করলেন। গ্রামের মানুষদের এই বিষয়ে সচেতন করার দায়িত্ব চাপে তখন আলিয়ার কাঁধেই। ওই পার্কের রক্ষণাবেণের দায়িত্বও পান তিনি।
১৭১৯
পরে জুওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া পার্কটিকে ভাল করে ঘিরে দেয়। তার ভিতর কিছুটা অঞ্চল পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। আলিয়াই হলেন সেখানকার একমাত্র ইংরাজি বলা ট্যুর গাইড।
১৮১৯
পর্যটকদের দেখানোর জন্য তাঁর সংগ্রহে একটি ডাইনোসরের ডিমও রয়েছে। এই ডিমটি গ্রামের এক বয়স্ক মহিলার কাছ থেকে তিনি উদ্ধার করেছিলেন।
১৯১৯
একমাত্র এই জুরাসিক পার্কেই ডাইনোসরের ডিম ছুঁয়ে দেখতে পারেন পর্যটকেরা।