প্রতীকী ছবি।
ডিজিটাল দুনিয়ায় নজরদারি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নয়া বিধির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের কর্তা ও সমাজকর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, এই বিধির ফলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ধাক্কা খাবে।
গত মাসে ডিজিটাল দুনিয়া নিয়ে নয়া বিধি ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। নজরদারির জন্য ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমের বিষয়বস্তু সম্পর্কে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে নিয়োগ করা হয়েছে নির্দিষ্ট আধিকারিক। পুরো প্রক্রিয়ার উপরে নজরদারি চালাবে একটি সরকারি কমিটি। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব ডিজিটাল মাধ্যমের বিতর্কিত বিষয়বস্তু ব্লক করতে পারবেন। ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির পাশাপাশি এই বিধি নিউজ ওয়েবসাইটগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সংবাদমাধ্যমের একাংশের মতে, এর ফলে কোনও বিষয়বস্তুকে সরকার-বিরোধী বলে মনে হলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সরকার। ‘দ্য ওয়্যার’ নিউজ় পোর্টালের সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের মতে, ‘‘এই বিধির ফলে ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা শেষ হয়ে যাবে।’’
দিল্লি হাইকোর্টে এই বিধির বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছে পোর্টালটি। আইনি খবর সংক্রান্ত পোর্টাল ‘লাইভ ল’-ও একই আবেদন জানিয়েছে কেরলের আদালতে।
এখন ওই বিধি না মানার অভিযোগে ‘লাইভ ল’-এর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত।
মোদী সরকারের অবশ্য দাবি, তারা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের বক্তব্য, ‘‘সব স্বাধীনতার সঙ্গেই দায়িত্বও থাকা জরুরি।’’ সরকারের মতে, এই বিধির মাধ্যমে সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধি ডিজিটাল মাধ্যমের ক্ষেত্রেও চালু করা হয়েছে।
ভারতে সম্প্রতি অনলাইন মিডিয়া সংস্থার সংখ্যা বেড়েছে। তবে সরকার-বিরোধী খবর প্রকাশিত হলে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন অনেক সাংবাদিক। নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন অধ্যাপক জ়োয়া হাসানেরও বক্তব্য, ‘‘এই বিধির ফলে অন্য স্বাধীনতার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও ধাক্কা খাবে বলেই আমি মনে করি। সরকার বিরোধী স্বর সহ্য করতে রাজি নয়। তাই এই বিধির মাধ্যমে ডিজিটাল নিউজ ও অন্য প্ল্যাটফর্মগুলিকে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ ভারতে বিরোধী স্বরের পরিসর কমা নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছে একাধিক বিদেশি সংস্থাও। আমেরিকান বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউজ়’-এর মতে, ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ধাক্কা খেয়েছে। মোদী সরকার জানিয়েছে, ‘ফ্রিডম হাউজ়’-এর রিপোর্ট ভুল। ভারতের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জাভড়েকর টুইটারে জানান, দেশের কয়েকটি বড় সংবাদপত্র ও চ্যানেলের একটি গোষ্ঠী নয়া বিধিকে স্বাগত জানিয়েছে। যে সব সংস্থা কেবল ডিজিটাল মাধ্যমে খবর প্রকাশ করে তাদের চেয়ে ওই গোষ্ঠীর সদস্যদের আলাদা ভাবে দেখা উচিত বলেও জানিয়েছে তারা। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ছোট ডিজিটাল নিউজ সংস্থাগুলির একাংশ। তাদের প্রশ্ন, কোনও ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবহেলা করা হচ্ছে কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy