কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর ১৫ বছরের সরকারে শীলা দীক্ষিত যে দিল্লির চেহারা বদলে দিয়েছিলেন, তা দল-মত নির্বিশেষে সকলেই মানেন। সেই ‘শীলা দীক্ষিতের দিল্লি’-কে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েই এ বার কংগ্রেস দিল্লি পুরসভার ভোটে নেমেছিল। কিন্তু ভোটের ফল বলল, ‘দিল্লির দিল’ থেকে সনিয়া-রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস কার্যত মুছে গিয়েছে।
দিল্লি পুরসভার ২৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৯টি। পাঁচ বছর আগের পুরভোটে কংগ্রেস প্রায় ২১% ভোট পেয়েছিল। এ বার তা ১১%-এর ঘরে নেমে এসেছে। এমনকি পুরনো দিল্লির যে সব মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় কংগ্রেস বরাবর জিতে এসেছে, সেখানেও কংগ্রেস এ বার হেরেছে। একমাত্র সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্র শাহিন বাগ ও তাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া হিংসার পটভূমি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে কংগ্রেস কিছু ওয়ার্ড জিতেছে।
দিল্লি পুরসভায় গো-হারা হারের পরে কংগ্রেসের একমাত্র আশা, আগামিকাল গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের ভোটের ফল বেরোলে তারা অন্তত হিমাচলের ভোটে জিতে সরকার গড়তে পারবে। আর গুজরাতে কংগ্রেসই প্রধান বিরোধী দল থাকবে। হিমাচলে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের প্রথা বজায় থাকলে এ বার এমনিতেই বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার কথা। কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, হিমাচলও জিততে না পারলে তাদের কর্মীদের মনোবল ফের ভেঙে পড়বে। রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-ও ধাক্কা খাবে।
কংগ্রেস সূত্র বলছে, দিল্লিতে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও তা মেটানোর চেষ্টা হয়নি। প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে প্রবীণদের সমন্বয়ের অভাব থেকে গিয়েছে। কংগ্রেস শীলা দীক্ষিতের নামে ভোট লড়লেও তাঁর ছেলে সন্দীপই প্রচারে ছিলেন না। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা তো দূরের কথা, দিল্লির ভারপ্রাপ্ত নেতা শক্তিসিংহ গোহিলই উৎসাহ দেখাননি। তাই খুব বেশি হলে ২০টি ওয়ার্ড জেতার আশাও ছিল না।
কংগ্রেস নেতাদের একাংশ অবশ্য দিল্লি পুরসভায় বিজেপিকে হারিয়ে আপের জয়কে ‘লেসার ইভল’-এর জয় হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। উল্টো দিকের যুক্তি হল, পুরো বিজেপি-বিরোধী ভোটই আম আদমি পার্টির কাছে চলে গিয়েছে। তারই ছবি ফুটে উঠেছে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে। আপের দফতরে যখন আজ দিনভর জয়ের উৎসব চলেছে, তখন ঠিক বিপরীতে দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস দফতর ফাঁকা পড়ে থেকেছে। রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা মাণিকম টেগোর যুক্তি দিয়েছেন, আপের থেকে বিজেপি-বিরোধী ভোট ফের কংগ্রেসের কাছে ফিরছে। তার প্রমাণ হল, ২০২০-র বিধানসভা ভোটের তুলনায় আপের ভোট কমেছে। বিজেপির ভোট একই থাকলেও কংগ্রেসের ভোট বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ৪.৩% থেকে বেড়ে ১১.৬% হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসেরই অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আত্মসমীক্ষা ও কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy