সাংবাদিক সম্মেলন করে এসপি-র সমালোচনা করলেন মায়াবতী।—ছবি পিটিআই।
লোকসভা ভোটের ফলাফলের রাতেই এসপি নেতা অখিলেশ যাদব হিসেব করে দেখেছিলেন, জোটসঙ্গী মায়াবতীর তরফ থেকে ভোট তাঁদের ঝুলিতে আসেনি। তবে তিনি এই নিয়ে সাড়াশব্দ করেননি।
মায়াবতী কিন্তু রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে সমালোচনা করলেন এসপি-র। জানিয়ে দিলেন, বিধানসভা উপনির্বাচনে ১১টি আসনেই একা লড়বেন। তাঁর অভিযোগ, এসপি-র সমর্থক যাদবরা ভোট দেননি বিএসপি-কে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এটি পোড়খাওয়া মায়ার কৌশল মাত্র। তিনি অদূর ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে এসপি-র হাত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির তদন্ত নিয়ে সিবিআই-এর চাপ ক্রমশ বাড়ছে তাঁর উপরে। মুলায়ম এবং অখিলেশ যাদবের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত বন্ধ করে দিলেও মায়ার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেনি। আপাতত কেন্দ্রের শাসক দলকে বার্তা দেওয়া প্রয়োজন ছিল তাঁর। ১১টি উপনির্বাচনে বিএসপি একা লড়লে এই মুহূর্তে সব চেয়ে লাভ হবে বিজেপির। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হওয়ার পরে মায়ার সামনে এখন একটাই লক্ষ্য। ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া।
মোদীর প্রবল আধিপত্যের জমানায় কোন হিসেবে ‘বহেনজি’ এমন অঙ্ক কষছেন? ঘরোয়া ভাবে বিএসপি সূত্র জানাচ্ছে, বিধানসভা ভোটে মোদীর সঙ্গে নয়, লড়াই হবে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে। গত দু’বছরেই যাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। বিভিন্ন স্তর থেকে হাজারো অভিযোগ। মায়ার হিসেব, এই ‘প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা’ আরও বাড়বে ২০২২ সালে। একলা লড়লে তার সুফল অনেকটাই নিতে পারবেন তিনি।
গত লোকসভা ভোটে জোটের হিসেবে বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে মায়ার। তাঁর আসন শূন্য থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশ। মোট ৩৮টি আসনে লড়াই করা বিএসপি-র ভোট কমপক্ষে ১৫ শতাংশ বেড়েছে ২১টি লোকসভা আসনে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ-ও দেখা যাচ্ছে, যথেষ্ট পরিমাণ যাদব ভোট পেয়েছেন ‘বুয়া’ (যদিও তাঁর দাবি সম্পূর্ণ বিপরীত)। সূত্রের বক্তব্য, যাদব ভোট ছাড়া গাজিপুর, ঘোষি বা জৌনপুরের মতো আসন বিএসপি-র পক্ষে জেতা সম্ভব ছিল না। মায়াবতী শিবিরের দাবি, যে ভাবে অখিলেশের স্ত্রী ডিম্পল, ভাই ধর্মেন্দ্র এবং অক্ষয়ের পরাজয় হয়েছে— তাতে এটা স্পষ্ট যে, যাদব ভোট ছেড়ে যাচ্ছে এসপি-কে। ভবিষ্যতেও এই প্রবণতা বাড়বে। পাশাপাশি, ২০২২ সালে রাজ্যের মুসলমানেরা যখন দেখবেন যে, এসপি-র বদলে মায়াবতীই বিজেপি-বিরোধী প্রধান মুখ— তখন মুসলমান-দলিত-যাদব ভোটের মঞ্চ তৈরি করতে সুবিধেই হবে তাঁর।
ফলে জোটের চূড়ান্ত বিচ্ছেদ নিজের মুখে ঘোষণা না-করলেও মায়াবতী এখন সেটাই করতে চাইছেন, যা তিনি ২০০৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের আগে করেছিলেন। অর্থাৎ একলা চলে, নিজের ভোটব্যাঙ্ককে সংহত করে হতাশ এবং বিক্ষুব্ধ যাদব মুসলিম সম্প্রদায়কে নিজের পাশে নিয়ে আসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy