—ফাইল চিত্র।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে দ্বাদশ শ্রেণিতে অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যা আর বাধ্যতামূলক রইল না। বরং ওই দু’টি বিষয়কে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে তালিকাভুক্ত করল অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)। স্নাতকস্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং (বিই) এবং প্রযুক্তি শিক্ষার (বিটেক) ক্ষেত্রে ২০২১-’২২ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়ম চালু করা হল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে বিতর্ক দানা বেধেছে।
বিই এবং বিটেক-এর ক্ষেত্রে এত দিন অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ২০২১-’২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য যে নির্দেশনামা প্রকাশ করেছে এআইসিটিই, তাতেই স্নাতকস্তরে ভর্তির জন্য এই রদবদল ঘটানো হয়েছে। নয়া নিয়ম অনুযায়ী, পদার্থবিদ্যা, অঙ্ক, রসায়ন, কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রনিক্স, তথ্যপ্রযুক্তি, বায়োলজি, ইনফরমেটিকস প্র্যাকটিসেস, বায়োটেকনোলজি, টেকনিক্যাল ভোকেশনাল বিষয়, কৃষি, ইঞ্জিনিয়াকিং গ্রাফিকস, বিজনেস স্টাডিজ এবং অন্থ্রপ্রনিয়োরশিপের মধ্যে যে কোনও তিনটি বিষয়ে পাশ করলেই স্নাতকস্তরে বিই এবং বিটেক পড়ার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা।
তবে শুধুমাত্র পাশ করলেই হবে না, বিই এবং বিটেক পড়ার জন্য দ্বাদশ শ্রেণিতে তিনটি বিষয় মিলিয়ে অন্তত ৪৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। সংরক্ষণের সুবিধা পান যে পড়ুয়ারা তাঁদের ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তবে পরবর্তী কালে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যায় আলাদা ব্রিজ কোর্স করাতে পারেন বলেও জানিয়েছে এআইসিটিই।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষাবিদরা। তাঁদের মতে, ইঞ্জানিয়ারিংয়ের ভিত্তিই হল অঙ্ক। সেটাই যদি বাদ দেয় কেউ, তা হলে নিম্নমেধার ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হবে দেশে। তামিলনাড়ুর শস্ত্র ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এস বৈদ্যসুব্রহ্মণ্যণ বলেন, ‘‘অঙ্কে দুর্বল হলে আলাদা করে ব্রিজ কোর্স করিয়ে সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক স্তরের অঙ্ক, যাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ভিত্তি বলে মনে করা হয়, ব্রিজ কোর্স কখনও তার বিকল্প হতে পারে না।’’ এআইসিটিই-র নির্দেশিকায় সব কোর্সেই পঞ্চম সেমেস্টার পর্যন্ত অঙ্ক রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অঙ্ক ছাড়া উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা পড়ুয়ারা হাবুডুবু খাবেন বলেই মনে করছেন তিনি।
মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটির পদার্থ্যবিদ্যা বিভাগের প্রধান রিটা জন বলেন, ‘‘পদার্থবিদ্যা এবং অঙ্ক ছাড়া বিজ্ঞানের সঙ্গে পড়ুয়াদের বোঝাপড়ই গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। তাই এই দু’টি বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে যান, তাঁরা কিন্তু প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হবেন। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও তা সমস্যা ডেকে আনবে।’’
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে আগে আটটির মধ্যে সাতটি সেমেস্টারেই অঙ্ক বাধ্যতামূলক ছিল। যে কারণে ইঞ্জিনিয়ারদের মেধা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থাকত না বলে মত অধ্যাপকদের একাংশেরও। বর্তমানে ৩টি সেমেস্টারেই অঙ্ক বাধ্যতামূলক। চতুর্থ সেমেস্টারে তা ঐচ্ছিক। সে ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিকেই যদি অঙ্ক রাখতে না হয়, তা হলে ইঞ্জিনিয়ারিং মৌলিক বিষয়বস্তুই পড়ুয়াদের বোধগম্য হবে না বলে মত তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy