মনমোহনের মন্তব্য, ‘‘এক দিকে দেশের মানুষ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের সমস্যায় ভুগছেন, অন্য দিকে, বর্তমান সরকার, গত সাড়ে সাত বছরের ভুল স্বীকার করে, সংশোধন না করে, এখনও প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দোষারোপ করছে।’’ দাবি করেন, এক দশকের প্রধানমন্ত্রিত্বে তিনি কখনও এমন দোষারোপের রাজনীতি করেননি।
মোদী এবং মনমোহন।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রয়াত হয়েছেন প্রায় ৫৮ বছর আগে। কিন্তু নানা প্রসঙ্গে এবং অপ্রসঙ্গে নেহরু-নিন্দায় এখনও অক্লান্ত উৎসাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এমনকি, দেশে বর্তমান নানা সমস্যার জন্যেও নেহরুকেই দায়ী করেন তিনি। এ বার মোদীর এমন আচরণের নিন্দা করলেন প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহ। বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো-বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী পদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।’’
পঞ্জাবের বিধানসভা ভোট আগামী রবিবার। তার আগে মনমোহনের এমন ভিডিয়ো বক্তৃতা রাজনৈতিক ভাবে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি মাসেই রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে লোকসভায় বিতর্কের জবাবি বক্তৃতায় দেশভাগের জন্য নেহরু এবং কংগ্রেসকে দুষেছিলেন মোদী। সেই অভিযোগ খারিজ করে মনমোহন বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস কখনওই রাজনৈতিক ফায়দা বা সত্য লুকানোর জন্য দেশকে ভাগ করেনি।’’
দেশের ‘পিছিয়ে থাকা’-র জন্য মোদী অতীতে একাধিক বার নেহরুকে দায়ী করেছেন। লোকসভায় জবাবি বক্তৃতায় অনুন্নয়নের পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি সমস্যার জন্যেও নেহরুকে টেনে এনেছিলেন তিনি। নেহরুর ‘অপরাধ’, লালকেল্লা থেকে বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, কোরিয়ার লড়াই বা আমেরিকায় কোনও সমস্যা হলে ভারতের বাজারে মূল্যবৃদ্ধিতে তার প্রভাব পড়ে। মোদীর এমন অভিযোগের জবাবে অর্থনীতিবিদ মনমোহনের মন্তব্য, ‘‘এক দিকে দেশের মানুষ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের সমস্যায় ভুগছেন, অন্য দিকে, বর্তমান সরকার, গত সাড়ে সাত বছরের ভুল স্বীকার করে, সংশোধন না করে, এখনও প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দোষারোপ করছে।’’ তাঁর দাবি, এক দশকের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় তিনি কখনও এমন দোষারোপের রাজনীতি করেননি। দেশের গরিমা ক্ষুন্ন হতে দেননি।
লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ নিয়েও মোদীকে খোঁচা দিয়েছেন মনমোহন। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে মোদীর ‘প্রমোদবিহার’ নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আশা করছি উনি বুঝেছেন, জোর করে আলিঙ্গন, দোলনায় দোলা বা বিরিয়ানি খাওয়ানোর পথে বিদেশনীতি পরিচালিত হতে পারে না।’’
মনমোহনের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় নানা প্রসঙ্গেই তাঁর প্রতি তীর্যক মন্তব্য করেছেন মোদী। এ বিষয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘আমি অন্তত এই তৃপ্তি পেয়েছি যে আমার বিরুদ্ধে দুর্বল, শান্ত এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার মিথ্যা অভিযোগের পরে, বিজেপি এবং তার বি এবং সি-টিমের আসল রূপ দেখতে পাচ্ছে দেশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy