রবিবার গ্রেফতার করা হয় মণীশ সিসৌদিয়াকে। ফাইল চিত্র।
গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। দিল্লিতে আবগারি দুর্নীতি মামলায় রবিবার উপমুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সোমবার আদালতে হাজির করানো হয় সিসৌদিয়াকে। তাঁকে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি শিক্ষা এবং অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বও রয়েছে সিসৌদিয়ার কাঁধে। সিসৌদিয়ার গ্রেফতারি একটা ‘নোংরা রাজনীতি’ বলে সরব হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ কারণেই সিসৌদিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সরব হয়েছে আম আদমি পার্টি। এমনকি, এই গ্রেফতারির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই দুষেছেন আপ নেতারা। যদিও আপের এই দাবি উড়িয়েছে বিজেপি। যার জেরে আপ এবং বিজেপির সংঘাত চরমে উঠেছে।
সোমবার আদালতে সিবিআই দাবি করেছে, তাদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন সিসৌদিয়া। আবগারি নীতির প্রথম খসড়ার অন্তত ৬টি বিষয়ের ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। সিবিআইয়ের দাবি, পানীয় বিক্রয়কারী সংস্থাগুলির স্বার্থেই আবগারি নীতির খসড়ায় বদল আনা হয়েছিল। তার বিনিময়ে ১০০ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছিল। সিবিআই আরও দাবি করেছে, সিসৌদিয়ার কম্পিউটার থেকে আবগারি নীতির খসড়ার একটি নোট মিলেছে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, আবগারি কমিশনারকে ওই নোট দিয়েছিলেন সিসৌদিয়া। যদিও তার সঙ্গে আইনি উপদেষ্টাদের যে পরামর্শ ছিল, সেই অংশ বাদ দিয়েছিলেন।
কী এই আবগারি দুর্নীতি?
২০২১ সালে ১৬ নভেম্বর নয়া আবগারি নীতি আনে দিল্লি সরকার। মদ কেনাবেচার পদ্ধতিতে বদল করা হয়।নতুন আবগারি নীতিতে সরকারি মদের দোকানগুলি বন্ধ করে বেসরকারি মদের দোকানগুলিকে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। কেজরীওয়াল সরকার চেয়েছিল, নতুন করে ৮৪৯টি মদের দোকান খোলা হবে। রাজধানীর ৩২টি অঞ্চলে এই মদের দোকান খোলার পরিকল্পনা ছিল। উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশই আবগারি দফতরের দায়িত্বে। নতুন আবগারি নীতিতে মদের কালোবাজারি বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়বে বলেও দাবি করেছিল সরকার। আগে দিল্লিতে মোট ৮৬৪টি মদের দোকান ছিল। ৪টি সরকারি সংস্থা ৪৭৫টি মদের দোকান চালাত। বাকি ৩৮৯টি বেসরকারি সংস্থার মালিকদের হাতে ছিল। এই নীতি কার্যকর করতে আবগারি লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম এমনকি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে। যার জেরে নতুন আবগারি নীতি চালুর ঠিক ৮ মাস পর, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। দাবি করা হয়, নতুন নীতিতে পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। নতুন ৬৪৪টি মদের দোকান খোলা হলেও শেষমেশ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পেরে লাইসেন্স ফিরিয়ে দিতে শুরু করেন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার পুরনো আবগারি নীতিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দিল্লির উপরাজ্যপাল বিনয়কুমার সাক্সেনা আপ সরকারের এই নতুন নীতিতে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন। তার পরেই তদন্তে নামে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy