মণিপুরি অভিনেত্রী সোমা লাইশ্রম। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
হিংসায় পুড়ছে রাজ্য, তার পরেও কেন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় কেন অংশ নিলেন, এই প্রশ্ন তুলে অভিনেত্রী সোমা লাইশ্রমকে বয়কটের ডাক দিল মণিপুরের একটি নাগরিক সংগঠন।
মণিপুরের সবচেয়ে বড় নাগরিক সংগঠন কাংলেইপাক কানবা লুপ (কেকেএল)। এই সংগঠনটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাকে বয়কট করেছিল। সেই প্রতিযোগিতায় যাতে রাজ্যের কেউ অংশ না নেন, সেই বার্তাও দিয়েছিল। কিন্তু অভিনেত্রী লাইশ্রম কেকেএল-এর সেই আবেদন উপেক্ষা করে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। আর তাতেই রোষের মুখে পড়তে হল তাঁকে।
কেকেএল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, আবেদন করার পরেও লাইশ্রম ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। তাই এখন থেকে আগামী তিন বছরের জন্য তাঁকে বয়কট করা হল। সংগঠন মনে করে, এই ঘটনার পর লাইশ্রমকে কোনও কাজে না নেওয়া উচিত চিত্রপরিচালকদের। কেকেএল আরও জানিয়েছে, লাইশ্রম যাতে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ না নেন, তার জন্য মণিপুর ফিল্ম অ্যাক্টর্স গিল্ড-এর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। সংগঠনটির অভিযোগ, এই প্রতিযোগিতায় অংশ না নিতে অভিনেত্রীকে ব্যক্তিগত ভাবেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তিনি অংশ নিয়েছেন। সুতরাং তাঁকে বয়কট করাই প্রয়োজন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেকেএল।
দেড়শোরটিরও বেশি মণিপুরি ছবি করেছেন লাইশ্রম। বহু পুরস্কারও পেয়েছেন অভিনয়ের জন্য। শনিবার নয়াদিল্লিতে উত্তর-পূর্ব ছাত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন লাইশ্রম। রাজ্যের জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে বয়কটের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর অনুরাগীরা অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন। অভিনেত্রী অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, তিনি এই মঞ্চকে ব্যবহার করে মণিপুরে হিংসার ঘটনা কথা তুলে ধরে শান্তি ফিরিয়ে আনার বার্তা দিতে চেয়েছেন।
লাইশ্রমের কথায়, “এক জন অভিনেতা এবং সমাজমাধ্যম প্রভাবী হওয়ায় আমারও দায়িত্ব এবং কর্তব্য মণিপুরের হিংসা পরিস্থিতি গোটা দেশের সামনে তুলে ধরা। তাই এই মঞ্চকেই বেছে নিয়েছিলাম। যে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম সেটি উত্তর-পূর্বের ছাত্রছাত্রীদের একটি উৎসব ছিল। কোনও ফ্যাশন বা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা নয়।” তিনি আরও বলেন, “এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। উত্তর-পূর্বের সব রাজ্য থেকেই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বরা প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেন। মণিপুরের জনপ্রিয় মুখ হিসাবে আমাকেও রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর এই মঞ্চে মণিপুরের পরিস্থিতি তুলে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।”
মণিপুরের নাগরিক সংগঠন কেকেএল লাইশ্রমকে বয়কটের ডাক দিলেও তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছে মণিপুরের ফিল্ম ফোরাম। সংগঠনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy